আগেই আঁচ করতে পেরেছিলেন ইমরান খান!

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল আরও কয়েকবার। কিন্তু নানা কৌশলে তা এড়িয়েছিলেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান। তবে গতকাল আর শেষ রক্ষা হয়নি। গ্রেপ্তার হতে হয়েছে তাকে। তবে কিছুক্ষণ আগে তিনি বিষয়টি বুঝতে পেরেছিলেন। খবর হিন্দুস্তানটাইমস।

ইমরান খান

স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, আল কাদির ট্রাস্টের জমি হস্তগত করার অভিযোগে সম্প্রতি ইমরান খানের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। সেই মামলার জামিন নিতেই মঙ্গলবার (৮ মে) সকালে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে গিয়েছিলেন তিনি। আদালত চত্বরে ঢোকার আগেই তাকে গ্রেপ্তার করে আধাসামরিক সংস্থা রেঞ্জার্স বাহিনী। কয়েক ঘণ্টা পর তারা ইমরান খানকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

বিষয়টি আঁচ করতে পেরে গ্রেপ্তার হওয়ার কিছুক্ষণ আগে এক ভিডিও বার্তায় বিষয়টি শেয়ার করেছিলেন ইমরান খান। দলে নেতা-কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যতক্ষণে আমার এই বার্তা আপনাদের কাছে পৌঁছবে, ততক্ষণে একটি অবৈধ মামলায় আমাকে গ্রেপ্তার করা হবে।

পাকিস্তানজুড়ে বিক্ষোভ, সহিংসতা

পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী সাবেক এই ক্রিকেটার আরও বলেন, পাকিস্তানে আমাদের মৌলিক ও আইনি অধিকারের সমাধি হয়ে গেছে। এরপর হয়ত আপনাদের সঙ্গে আমার আর কথা বলার সুযোগ হবে না।

ইসলামাবাদ হাইকোর্ট জামিন না দিয়ে ইমরান খানের গ্রেপ্তারকে বৈধ ঘোষণা করায় ইমরান খান কারাগারে রাত কাটিয়েছেন। হাইকোর্টের এই রায়কে আজ বুধবার (১০ মে) সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করা হবে।

গত সপ্তাহেই ইমরান খান প্রকাশ্যেই শীর্ষ এক সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ করেছিলেন। তাতে তিনি বলেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল ফয়জল নাসের গত নভেম্বরে পাক পঞ্জাবের ওয়াজিরাবাদে তার ওপর হামলার ঘটনার মূল ষড়যন্ত্রকারী। বিষয়টি তাজা থাকতেই গ্রেপ্তার হন ইমরান। আর সে কারণে পিটিআই কর্মী-সমর্থকদের ক্ষোভের আগুনের শিকার হয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী।

রাওয়ালপিন্ডির সেনা সদরের পাশাপাশি লাহোর, পেশোয়ার, করাচির সেনানিবাসেও হামলার খবর পাওয়া গেছে। হামলা ঠেকাতে গুলি চালানোর ঘটনাও ঘটেছে। এ পরিস্থিতিতে আপাত গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন সরকারের ভূমিকা।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছে যুক্তরাষ্ট্রও। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইসলামাবাদে কী ঘটেছিল সে সম্পর্কে তারা সচেতন। তবে একক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বা দলের ব্যাপারে তাদের কোনো অবস্থান নেই। সকল পক্ষকে আইনের শাসন মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, আমরা শুধু নিশ্চিত করতে চাই যে পাকিস্তানে যা কিছু ঘটুক তা যেন আইনের শাসন এবং সংবিধানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।