খামেনি: পশ্চিমাদের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তিতে ‘ভুল কিছুই নেই'

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, পশ্চিমাদের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি করায় কোনো ভুল নেই। তবে আমাদের পারমাণবিক অবকাঠামো অক্ষত রেখেই তাদের সঙ্গে একটি চুক্তি করা সম্ভব হবে। খবর আনাদোলু এজেন্সি।

আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি

১১ জুন, রোববার রাজধানী তেহরানে দেশটির পারমাণবিক অর্জন নিয়ে একটি প্রদর্শনীর ফাঁকে পারমাণবিক সংস্থার সিনিয়র কর্মকর্তা এবং পরমাণু বিজ্ঞানীদের সঙ্গে বৈঠক করেন খামেনি। এ সময় তিনি এই মন্তব্যটি করেছিলেন। বর্তমানে দেশটির পরমাণু কর্মসূচি এবং ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি নিয়ে ইরান ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে গেছে।

ইরানের পারমাণবিক বোমা তৈরির বিষয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর দাবিকে মিথ্যা বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন খামেনি। তিনি বলেছেন, ‘তেহরান এটা চায় না। কারণ এটা আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের সঙ্গে সঙ্গত নয়।'

তিনি পশ্চিমাদের বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার ইউরোপীয় মিত্রদের পাশাপাশি জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থাকে প্রতিশ্রুতি পালন না করার জন্য অভিযুক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এর ফলে আমরা কেবল একটি অভিজ্ঞতাই অর্জন করেছি। আর তা হল কখনই পশ্চিমাদের কথায় বিশ্বাস করা উচিত নয়।'

খামেনি জোর দিয়ে বলেছেন, ইরান গত ২০ বছরে বুঝেছে কাকে বিশ্বাস করতে হবে এবং কাকে নয়। তিনি দেশের পারমাণবিক শিল্পে অবদানের জন্য ইরানি বিজ্ঞানীদের প্রশংসা করে বলেছেন, ‘নিষেধাজ্ঞা, হুমকি এবং বিজ্ঞানীদের হত্যা সত্ত্বেও এই শিল্পটি এ দেশে গড়ে উঠেছে।'

গত দুই দশকে বেশ কয়েকজন ইরানি পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন। ২০২০ সালের নভেম্বরে সর্বশেষ নিহত হয়েছিলেন মোহসেন ফাখরিজাদেহ। পরমাণু বিজ্ঞানীদের হত্যার জন্য ইরানি কর্তৃপক্ষ বরাবরই ইসরায়েলকে দায়ী করেছে।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, চীন এই ছয় জাতির সঙ্গে একটি পারমাণবিক চুক্তি করেছিল ইরান। চুক্তি অনুযায়ী আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিনিময়ে দেশটির ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যকলাপকে সীমিত করা হয়েছিল। ফলে তেহরানের জন্য পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করা কঠিন হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসেন। বর্তমানে বাইডেন প্রশাসন ইরানের সঙ্গে নতুন একটি পারমাণবিক চুক্তি করার জন্য আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।