ইভিএমে ভোট ডাকাতির দাবিদার সেই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা

কক্সবাজারে ইভিএম পদ্ধতির ভোটের মধ্যেও ৮টি কেন্দ্রে ভোট ডাকাতির দাবিদার সেই যুবলীগ নেতা ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা করেছেন কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল।

এস এম ইমরুল কায়েস চৌধুরী

মামলার বিবরণীতে জানা গেছে, গত ৬ জুন কক্সবাজার পৌরসভার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিজয়ী মেয়র প্রার্থী মাহবুবুর রহমান চৌধুরীর প্রচারণা সভায় অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন উখিয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী এবং হলদিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান এস এম ইমরুল কায়েস চৌধুরী। বক্তব্যের এক পর্যায়ে তিনি অপর মেয়র প্রার্থী ও আওয়ামী লীগ নেতা মাশেদুল হক রাশেদের ছোটভাই সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েলের উদ্দেশে বলেন, বিগত নির্বাচনে তোমার জন্য কক্সবাজারে ৮টি কেন্দ্রে আমি ভোট ডাকাতি করেছি, নৌকার পক্ষে গিয়ে। আমি ইমরুল কায়েস যদি না থাকতাম, উপজেলা চেয়ারম্যান হতে পারতে না তুমি। এমনকি ইভিএমএর মধ্যেও তোমার জন্য ভোট ডাকাতি করে তোমাকে আমরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বানিয়েছি।

বক্তৃতায় ইমরুল কায়েস আরও বলেন, জুয়েল এসব কথা তোমার মনে না থাকলে শ্রদ্ধাভাজন মাসেদুল হক রাশেদের (নারকেলগাছ মার্কার প্রার্থী) কাছে জিজ্ঞেস করে দেখ। তোমার মেঝ ভাই জেলা পরিষদের মার্শাল মামা আছে, তাকে জিজ্ঞেস করে দেখ। ইভিএমের মধ্যেও তোমার জন্য ভোট ডাকাতি করে, কারচুপি করে তোমাকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বানিয়েছি। আর এখন তুমি কথায় কথায় আমাকে, আমাদেরকে টার্গেট করো। তুমি একজন অকৃতজ্ঞ। তুমি কৃতজ্ঞ হলে, সেদিনের কথা ভুলে যেতে না।

ইভিএম

ইমরুল কায়েস চৌধুরীর এ বক্তব্যের ভিডিও সঙ্গে সঙ্গে ভাইরাল হয়ে যায়। দেশে-বিদেশে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয়। পরে উক্ত ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় সরকার বিভাগকে নির্দেশনা দেয় বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কায়সারুল হক জুয়েল চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি দায়ের করেন। আদালত মামলার অভিযোগ আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্তপূর্বক রিপোর্ট দিতে বলেছেন। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মামলার বাদী কায়সারুল হক জুয়েল।

তিনি বলেন, চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরীর এ বক্তব্য বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার হওয়ায় আমার সুন্নাম ক্ষুণ্নের পাশাপাশি সরকারের সুষ্ঠু নির্বাচন প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয় নির্বাচন কমিশন। কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই আমি মামলাটি করেছি।

বাদী কায়সারুল হক জুয়েল মামলার আরজিতে আরও উল্লেখ করেন, নির্বাচনী প্রচারণার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ইমরুল কায়েস অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে লোমহর্ষক মিথ্যা ও মানহানিকর প্রদান করেন যা সংবাদপত্র ও টিভি চ্যানেলে প্রচার হয়েছে। এ বক্তৃতার মাধ্যমে তিনি বর্তমান সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করার মাধ্যমে সরকার বিরোধী বিদ্বেষ ও অস্থিরতা সৃষ্টির মতো অপরাধ সংঘটিত করেছেন।