ফিনস্টেইন: ইসরায়েলের বর্ণবাদ দক্ষিণ আফ্রিকার চেয়েও নৃশংস
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
দক্ষিণ আফ্রিকার মানবাধিকার আইকন নেলসন ম্যান্ডেলা এবং আর্চবিশপ ডেসমন্ড টুটুর একজন সাবেক সহকর্মী অ্যান্ড্রু ফেইনস্টেইন ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) নেওয়ার জন্য তার দেশের সিদ্ধান্তের প্রতি দৃঢ় সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। গাজা উপত্যকায় চলমান ফিলিস্তিনি গণহত্যার নিন্দা জানিয়েছেন তিনি।
অ্যান্ড্রু ফেইনস্টেইন
৭ জানুয়ারি, রোববার তুরস্কের সরকারি বার্তা সংস্থা আনাদোলুকে সাবেক এই রাজনীতিবিদ বলেছেন, ‘ইসরায়েলের বর্ণবাদ আমরা দক্ষিণ আফ্রিকায় যা দেখেছি তার চেয়ে অনেক বেশি নৃশংস।'
দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল কংগ্রেসের (এএনসি) গুরুত্বপূর্ণ রাজনীতিবিদদের মধ্যে একজন ছিলেন ফেইনস্টেইন। ব্রিটেনে বসবাসকারী সাবেক এই রাজনীতিবিদ হলোকাস্ট থেকে বেঁচে যাওয়া একজন ইহুদির পুত্র হিসেবে নিজেকে তুলে ধরে বলেছেন, ‘আমার মা জার্মান অধিকৃত ভিয়েনায় যুদ্ধ থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন। তিনি তার পরিবারের কয়েক ডজন সদস্যকে আউশভিৎসের ডেথ ক্যাম্পে হারিয়েছেন। পরবর্তীতে এই ক্যাম্পে আমি গণহত্যা প্রতিরোধের বিষয়ে বক্তৃতা দিয়েছি।'
তিনি আরও বলেছেন, ‘আমি আজ এখানে বলতে এসেছি যে কেন দক্ষিণ আফ্রিকা ইসরায়েলকে আইসিজেতে নিয়ে গেছে। কারণ আমি মনে করি দক্ষিণ আফ্রিকা জানে বর্ণবাদ কী জিনিস।'
ফেইনস্টেইন দক্ষিণ আফ্রিকার একটি আইনি নথির দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, 'গাজায় ইসরায়েলি কর্মকাণ্ড প্রমাণ করে তারা গণহত্যার অভিপ্রায়ে অবরুদ্ধ এই ছিটমহলে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে।'
সাবেক এই রাজনীতিবিদ জানিয়েছেন, দক্ষিণ আফ্রিকা এই মামলাটি আইসিজেতে নিয়ে এসেছে কারণ দেশটি বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় গাজায় ফিলিস্তিনিদের কীভাবে হত্যা করছে ইসরায়েলিরা।
ফেইনস্টেইন দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ইসরায়েলের বর্ণবাদী আচরণের পার্থক্য তুলে ধরেছেন। তিনি ইসরায়েলে বসবাসকারী ফিলিস্তিনি জনগণের বৈষম্যের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার কৃষ্ণাঙ্গদের কয়েক দশকের বৈষম্যের তুলনা করেন।
তিনি বলেছেন, 'ইসরায়েলের ফিলিস্তিনি নাগরিকরা ইহুদি নাগরিকদের সমকক্ষ নয়। তার ইহুদিদের চেয়ে কম অধিকার পায়। এটি জাতি বা ধর্মের ভিত্তিতে আইনের অধীনে সমতার নীতির চরম লঙ্ঘন।'
দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদী যুগে কৌশল হিসেবে শ্বেতাঙ্গ শাসকরা ছোট স্বদেশ বা বানটুস্তান তৈরি করত। ইসরায়েলিরাও পশ্চিম তীর, হেবরন এবং রামাল্লায় ইহুদিদের বসতি স্থাপন করছে। ফেইনস্টেইন উল্লেখ করেছেন, এভাবে ইচ্ছাকৃত বিভাজন দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের সম্ভাবনাকে বাধাগ্রস্ত করছে। এটি বর্ণবাদ ব্যবস্থায় নিপীড়নমূলক কৌশলের প্রতিধ্বনি করে।
ফেইনস্টেইন বলেছেন, ‘আমার সাবেক বস নেলসন ম্যান্ডেলা এবং আমার বন্ধু ও রাজনৈতিক পরামর্শদাতা আর্চবিশপ ডেসমন্ড টুটু, বর্ণবৈষম্যবাদী রাষ্ট্র কাকে বলে তা আমার চেয়ে আরও ভালো করেই জানতেন। তারা বর্ণবাদের সমালোচনা করেছেন। বর্ণবাদী ইসরায়েল ছিল বর্ণবাদী দক্ষিণ আফ্রিকার খুব ঘনিষ্ঠ মিত্র। তারা একে অপরকে পারমাণবিক শক্তি হতে, পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে সহায়তা করেছিল।'
তিনি বলেছেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা তার অর্থনীতি এবং কর্মশক্তির জন্য কালো আফ্রিকান সম্প্রদায়ের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল ছিল। অপরদিকে ইসরায়েল তার অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য ফিলিস্তিনিদের ওপর কম নির্ভরশীল। এই কারণে ইসরায়েল হাজার হাজার নিরীহ ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করছে। তারা ফিলিস্তিনিদের চায় না, তাদের প্রয়োজন নেই। এই বিষয়টি ইসরায়েলি বর্ণবাদকে দক্ষিণ আফ্রিকার চেয়ে অনেক বেশি নৃশংস করে তুলেছে।'
ফেইনস্টেইন গাজায় যুদ্ধবিরতিকে সমর্থন করতে অস্বীকার করার জন্য ব্রিটিশ লেবার পার্টির নেতা কেইর স্টারমারের সমালোচনাও করেছেন।
উল্লেখ্য, ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। ইসরায়েলিদের অবিরাম গোলাবর্ষণে ২২ হাজার ৭২২ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৫৮ হাজার ১৬৬ জন আহত হয়েছে। এছাড়া ১০৯ জন সাংবাদিককেও হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
শিরোনাম সাজেস্ট করুন
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.