ইরাক: মার্কিন বিমান হামলা আগ্রাসনমূলক কর্মকাণ্ড

ইরাকে সশস্ত্র বাহিনীর কয়েকটি ঘাঁটিতে সাম্প্রতিক মার্কিন বিমান হামলাকে আগ্রাসনমূলক কর্মকাণ্ড বলে অভিহিত করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। ২৪ জানুয়ারি, বুধবার সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ইয়াহিয়া রাসুল বলেছেন, ইরাক সরকারের সমর্থক পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্সেস নামে পরিচিত হাশদ আল শাবি এর সদর দফতরে মার্কিন বিমান হামলাকে আগ্রাসনমূলক কর্মকাণ্ড হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

ইরাক ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা

ইরাকের সরকারী বার্তা সংস্থা আইএনএ জানিয়েছে, ইয়াহিয়া রাসুল এক বিবৃতিতে বলেছেন, 'মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জুরফ আল-নাসর এবং আল-কাইম এলাকায় সেনাবাহিনী এবং পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্সেসের ঘাঁটিতে পুনরায় বিমান হামলা শুরু করেছে। ইরাকের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ক্ষতি করার সুস্পষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এই হামলা করা হয়েছে।'  

তিনি বলেছেন, ‘আমরা এই সামরিক অভিযানগুলোকে আগ্রাসন হিসাবে বিবেচনা করব। ইরাকিদের জীবন ও মর্যাদা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।' 

সামরিক মুখপাত্র যোগ করেছেন, 'যুক্তরাষ্ট্রের এই বিমান হামলা মার্কিন সেনাবাহিনীর সঙ্গে ইরাকি বাহিনীর দীর্ঘ সময়ের সহযোগিতাকে ক্ষুন্ন করেছে। এই ধরনের কাজগুলো গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের মতই সংঘাতকে বিস্তৃত করে এই অঞ্চলকে বিপন্ন করবে।' 

২৩ জানুয়ারি, মঙ্গলবার মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন জানিয়েছেন, ইরাকে ইরান সমর্থিত গ্রুপ কাতাইব হিজবুল্লাহ এবং অন্যান্য ইরানপন্থী গোষ্ঠীগুলোর তিনটি স্থাপনায় বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী।

তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ইরাক ও সিরিয়ায় মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের বিরুদ্ধে ইরানের মদদপুষ্ট মিলিশিয়াদের একের পর এক আক্রমণের প্রত্যক্ষ প্রতিক্রিয়া হিসেবে এই হামলাগুলো চালানো হয়েছে।' 

মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সদর দপ্তর পেন্টাগন এই হামলার জন্য পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্সে ইরানপন্থী মিলিশিয়াদের দায়ী করেছে। মার্কিনীদের দাবি, এই মিলিশিয়ারা এখন ইরাকি সশস্ত্র বাহিনীতে একীভূত হয়েছে।

ইরাকের আইন আল-আসাদ সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কয়েকদিন পর এই প্রতিশোধমূলক হামলা করেছে মার্কিন বাহিনী। এই ঘাঁটিতে মার্কিন সেনা রয়েছে।  

এদিকে ইরাকে মার্কিন ও জোট বাহিনীর ওপর কয়েক ডজন হামলার দায় স্বীকার করেছে ইরাকি মিলিশিয়াদের একটি নেটওয়ার্ক ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স।

উল্লেখ্য, ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের আক্রমণের প্রতিশোধ হিসাবে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। ইরাক ও সিরিয়ায় মার্কিন ঘাঁটি ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর আক্রমণের শিকার হয়। লোহিত সাগরে ইসরায়েলের সঙ্গে সংযুক্ত বাণিজ্যিক জাহাজে ইয়েমেনের ইরানপন্থী হুথিদের হামলা অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া লেবানন সীমান্তে হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত রয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।  

সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি