ইসরায়েল: গাজায় যুদ্ধবিরতি হলেও হিজবুল্লাহর ওপর হামলা বন্ধ হবে না

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও ইসরায়েলি সেনাবাহিনী লেবানন সীমান্তে হিজবুল্লাহর ওপর আক্রমণ বন্ধ করবে না। ২ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার লেবানন সীমান্তের কাছে একটি সামরিক ইউনিট পরিদর্শনকালে তিনি এই মন্তব্য করেছেন।

ইয়োভ গ্যালান্ট

গ্যালান্ট বলেছেন, ‘গাজা যুদ্ধ বন্ধ হলে ইসরায়েল লেবানন সীমান্তে গুলি চালানো বন্ধ করবে বলে বিশ্বাস করা হিজবুল্লাহর জন্য একটি বড় ভুল। আমি এখানে বেশ খোলাখুলিভাবে বলছি, যতক্ষণ না আমরা এমন একটি পরিবেশ তৈরি করতে পারি যেখানে বসতি স্থাপনকারীরা নিরাপদে বসবাস করতে পারে ততক্ষণ আমরা গুলি চালানো বন্ধ করব না।' 

প্রসঙ্গত, এখানে তিনি উত্তর ইসরায়েলের লক্ষাধিক বাসিন্দার কথা উল্লেখ করেছেন, যারা গাজা যুদ্ধের শুরুতে ইসরায়েল এবং হিজবুল্লাহর মধ্যে আন্তঃসীমান্ত সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে তাদের বাড়িঘর থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী লেবানিজ এবং ইসরায়েল অধিকৃত গোলান হাইটস ফ্রন্টে উচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেছে। 

এর আগে ২০০৬ সালে ইসরায়েল এবং হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর মধ্যে প্রায় ৪ মাসের একটি যুদ্ধ হয়েছিল। সেই যুদ্ধে লেবাননে ২ শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। নিহতদের বেশিরভাগই হিজবুল্লাহ যোদ্ধা। তবে ২৫ জন বেসামরিক নাগরিকও নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে তিনজন সাংবাদিকও ছিলেন।

সে সময় ইসরায়েলি কামান ও বিমান হামলা থেকে রক্ষা পেতে দক্ষিণ লেবাননের কয়েক লাখ বাসিন্দা তাদের শহর ও গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য  হয়েছে।

অপরদিকে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, ইসরায়েলের ৯ জন সেনা এবং ৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছিল। তবে হিজবুল্লাহর সেক্রেটারি জেনারেল হাসান নাসরাল্লাহ দাবি করেছেন, প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি ছিল।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা শক্তিগুলো ২০০৬ সালের যুদ্ধের অবসান ঘটাতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রেজল্যুশনকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করেছে। রেজল্যুশন ১৭০১ এ লেবাননের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী এবং জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী ব্যতীত ইসরায়েলের সীমান্ত থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে লিটানি নদীর উত্তরে সমস্ত সশস্ত্র যোদ্ধাদের ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানানো হয়েছে। 

এদিকে ইসরায়েল হুঁশিয়ারি দিয়েছে, কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে তারা হিজবুল্লাহকে সীমান্ত থেকে সরিয়ে দিতে সামরিক পদক্ষেপ নেবে। অপরদিকে হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করতে রাজি হলে তারা কূটনৈতিক সমাধানের প্রতি সমর্থন জানাবে। প্রায় ৪ মাস ধরে চলা এই যুদ্ধে ২৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। 

সূত্র: দ্য নিউ আরব