ইইউ কাউন্সিল: মধ্যপ্রাচ্যের প্রত্যেক নাগরিকের জীবন গুরুত্বপূর্ণ

ইউরোপীয় ইউনিয়ন কাউন্সিলের সভাপতি চার্লস মিশেল বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিটি নাগরিকের জীবন গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রত্যেক বেসামরিক জীবনকে অবশ্যই সম্মান করতে হবে। এক্ষেত্রে দ্বৈত মান এড়িয়ে চলতে হবে। মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) স্ট্রাসবার্গে ইইউ পার্লামেন্টের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব মন্তব্য করেন। খবর মিডলইস্টমনিটর আনাদোলু।

চার্লস মিশেল

চার্লস মিশেল তার ভাষণে গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা বা ইউএনআরডব্লিউএর গুরুত্ব তুলে ধরেন। গত ৭ অক্টোবরের হামাসের হামলায় ইউএনআরডব্লিউএর কিছু কর্মী যুক্ত ছিল বলে ইসরায়েলি অভিযোগ উঠার পর থেকে বেশকিছু দেশ সংস্থাটিতে অর্থায়ন স্থগিত রেখেছে।

ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে শান্তি স্থাপন এবং এই অঞ্চলে দুই-রাষ্ট্র সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে মিশেল বলেন, ইইউ এ বিষয়ে কখনও দ্বিমত পোষণ করেনি। ভাষণে তিনি উল্লেখ করেন, এই অঞ্চলে বিশেষ করে লোহিত সাগরের আশেপাশে ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতি কেবল নিরাপত্তাজনিত সমস্যাই নয়, অর্থনৈতিক সমস্যাও বটে।

বিধ্বস্ত গাজা

চলমান সংঘাতে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর ৫৬২ সদস্য নিহত হয়েছে। একই সময়ে আহত হয়েছে আরও দুই হাজার ৮২০ জন। এছাড়া ইসরায়েলে হামাসের ঝটিকা হামলায় প্রায় এক হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছিল।

এদিকে গাজা উপত্যকায় গত চার মাস ধরে চালানো ইসরায়েলি হামলায় ফিলিস্তিনিদের হতাহতের সংখ্যা লাখ ছাড়িয়েছে। ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইসরায়েলের বিমান ও স্থল হামলায় ২৭ হাজার ৫৮৫ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৬৬ হাজার ৯৭৮ জন আহত হওয়ার খবর জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় গাজার ৮৫ শতাংশ নাগরিক অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সেখানকার ৬০ শতাংশ অবকাঠানো চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। এছাড়া গাজায় খাদ্য, পানি, জ্বালানির প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়ায় গাজার লোকজন এখন চরম মানবেতর জীবন যাপনে বাধ্য হচ্ছে। ইসরায়েলের সম্মতিতে ছাড় পাওয়া আন্তর্জাতিক সাহায্য তাদের প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই নগণ্য। ফলে পুরো গাজাজুড়ে এখন দুর্ভিক্ষ চলছে।