জার্মানিতে অন্তর্ঘাতী হামলার ষড়যন্ত্র নস্যাৎ, রুশ গুপ্তচর সন্দেহে আটক দুই

ইউক্রেনে জার্মানির সামরিক সহায়তায় পরিকল্পিত অন্তর্ঘাতী হামলার ষড়যন্ত্র নস্যাতের দাবি করেছে বার্লিন সরকার। এ ষড়যন্ত্রে জড়িত সন্দেহভাজন দুই গুপ্তচরকে গ্রেপ্তার করেছে জার্মানি। বৃহস্পতিবার দক্ষিণ জার্মানির বাভারিয়া রাজ্য থেকে দুজনকে আটকের কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। খবর বিবিসির।

জার্মানিতে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে থাকা আব্রামস ট্যাংক

দুই বছরের বেশি সময় ধরে রাশিয়ার হামলার শিকার ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্রের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম সামরিক সহায়তাকারী দেশ হচ্ছে জার্মানি। ইউক্রেনকে এ পর্যন্ত ২৮ বিলিয়ন ইউরো সহায়তা দিয়েছে জার্মানি। আর এ কারণেই হয়তো রাশিয়ার সম্ভাব্য নাশকতার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে দেশটি।

জার্মান প্রসিকিউটররা জানিয়েছেন, দক্ষিণের বাভারিয়া রাজ্যের বায়রেউথ শহর থেকে নাশকতার পরিকল্পনাকারী সন্দেহে দুই গুপ্তচরকে আটক করা হয়েছে। দ্বৈত জার্মান-রাশিয়ান নাগরিক এই দুই ব্যক্তির একজন হচ্ছেন ডিটার এস এবং আরেকজন আলেকজান্ডার জে নামে পরিচিত।

জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেসার জানান, কর্তৃপক্ষ দুইজনকে আটকের মাধ্যমে ‘সম্ভাব্য বিস্ফোরক হামলা’ প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়েছে। দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে জার্মানিতে মার্কিন সামরিক স্থাপনা এবং অন্যান্য সাইট রেকি করা ও ছবি তোলার অভিযোগ রয়েছে।

প্রসিকিউটররা জানান, নাশকতার পরিকল্পনার প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে ডিটার এস বিস্ফোরণ ঘটানো ও অগ্নিসংযোগের পরিকল্পনা করেছিলেন। এ ব্যাপারে তিনি রাশিয়ার গোয়েন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছিলেন। এই ব্যক্তি রুশ অধিকৃত পূর্ব ইউক্রেনে ২০১৪-১৬ সালের দিকে রাশিয়ান প্রক্সি সশস্ত্র বাহিনীর হয়ে লড়াই করেছেন।

জার্মান প্রসিকিউটররা আরও জানান, দ্বিতীয় সন্দেহভাজন ব্যক্তি আলেকজান্ডার জে হামলার সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তু চিহ্নিত করতে গত মাস থেকে তাকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করে যাচ্ছেন।

প্রসিকিউটরদের মতে, ইউক্রেনের প্রতি জার্মানির সমর্থন নস্যাৎ করতে ডিটার এস গত বছরের অক্টোবর থেকে তার রুশ সংযোগের সঙ্গে সম্ভাব্য অন্তর্ঘাতমূলক হামলা নিয়ে আলোচনা করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে জার্মানিতে মার্কিন সামরিক স্থাপনা ও শিল্প অবকাঠামোকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করার কথা আলোচনা করেছেন তিনি।

প্রসিকিউটরা আরও জানান, ডিটার এস মার্কিন সামরিক স্থাপনা রেকি করেছেন, সেগুলোর ছবি ও ভিডিও তুলে রাশিয়ায় পাঠিয়েছেন। গুপ্তচরদের লক্ষ্যবস্তুগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল বাভারিয়ার গ্রেফেনওহর ও হোহেনফেলসে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটি, যেখানে ইউক্রেনীয় সৈন্যরা আব্রামস যুদ্ধট্যাঙ্কের প্রশিক্ষণ নিয়েছে।

দুই গুপ্তচর আটকের বিষয়ে জার্মান বিচারমন্ত্রী মার্কো বুশম্যান বলেন, দুই ব্যক্তির গ্রেপ্তার রাশিয়ান নাশকতা এবং গুপ্তচর নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জার্মানির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য। এদিকে অন্তর্ঘাতী হামলার ষড়যন্ত্র ফাঁস ও দুই ব্যক্তির গ্রেপ্তার ইস্যুতে বার্লিনে রুশ রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।