বাহাউদ্দিন নাসিম: মতিউর রহমানকে কেউ চিনত না, ছাগল চিনেছে!

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মতিউর রহমানকে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), গণমাধ্যম, এমনকি রাজনীতিবিদরাও চিনত না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম। বুধবার তিনি বলেন, ‘মতিউর রহমানকে একটি ছাগল চিনিয়ে দিয়েছে।’

বাহাউদ্দিন নাসিম

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

সম্প্রতি এনবিআর কর্মকর্তা, সাবেক পুলিশ ও সেনাবাহিনীর প্রধানদের দুর্নীতির বিষয়টি আলোচনায় আসে। সংবাদ সংস্থা ইউএনবিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নাসিম দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তাদের পক্ষে বিবৃতি দেওয়ার জন্য পেশাজীবীদের সংগঠনগুলোর তীব্র সমালোচনা করেন।

তিনি বলেন, ‘দুর্নীতিবাজদের পক্ষে বিবৃতি দিয়ে এসব সংগঠন দুর্নীতির দায়ভার নিজেদের কাঁধে তুলে নিচ্ছে।’ তিনি অন্যান্য দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তাদের খুঁজে বের করার ওপর জোর দেন এবং সরকারি সংস্থাগুলোকে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

আওয়ামী লীগের এই নেতা আরও বলেন, ‘কোনো রাজনীতিবিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি বা অন্যায়ের অভিযোগ উঠলে অন্য রাজনীতিবিদেরা ব্যবস্থা নেন না, পক্ষও নেন না। বরং তারা রাজনৈতিক ও আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সোচ্চার হন। সৎ রাজনীতিবিদদের এটাই হলো মহত্ত্ব। কিন্তু আমরা মাঝে মাঝে দেখি যে, সরকারি-বেসরকারি, আধা-সরকারি প্রতিষ্ঠান অথবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে সেই দুর্নীতিবাজ ব্যক্তির পক্ষ থেকে বিবৃতি দেওয়া হয়।’

‘অর্থাৎ সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ, তার দায়ভার সেই প্রতিষ্ঠানগুলোই গ্রহণ করে। এই দায়ভার পুরো প্রতিষ্ঠানের ওপর বর্তায়। এ অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।’

বাহাউদ্দিন নাসিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি বাস্তবায়নের জন্য দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি যেকোনো পক্ষ বা সংগঠনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে ভবিষ্যতে ঋণখেলাপি কমানো সম্ভব। ঋণখেলাপি, টাকা পাচারকারী, ব্যাংক ডাকাত এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধির পেছনে যারা রয়েছে তাদের শনাক্ত করতে হবে।

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, তাদের তালিকা তৈরি করে জাতির সামনে হাজির করা প্রয়োজন।’

তিনি আরও বলেন, এই স্বার্থান্বেষী চক্রের হাত থেকে দেশের জনগণকে রক্ষা করার জন্য একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করা উচিত।

উল্লেখ্য, গত ২১শে জুন বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এক বিবৃতিতে পুলিশ বাহিনীর বর্তমান ও সাবেক সদস্যদের বিরুদ্ধে কিছু সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনের নিন্দা জানিয়েছে।

বিপিএসএ তাদের অবসরপ্রাপ্ত এবং চাকরিরত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সংবাদ প্রতিবেদনকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট, অনুপ্রাণিত, বেপরোয়া এবং অতিরঞ্জিত’ হিসেবে অভিহিত করে সংবাদমাধ্যমকে আরও সতর্কতার সঙ্গে প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য অনুরোধ জানায়।