শুনানি স্থগিত: ৬ সমন্বয়ককে এখনও মুক্তি দেওয়া হয়নি

‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ ছয়জন সমন্বয়ককে 'অবৈধভাবে আটক' থেকে মুক্তি এবং আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে করা রিট আবেদনের শুনানি বুধবার স্থগিত করা হয়েছে।

ছবি - সংগৃহীত

একজন বিচারপতি অসুস্থ থাকায় দ্বৈত বেঞ্চ গঠন করা সম্ভব হয়নি, যার ফলে শুনানি স্থগিত করা হয়। এদিকে, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) হেফাজতে থাকা ছয় সমন্বয়কের পরিবারের সদস্যরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

গত ২৬ জুলাই বিকেলে ঢাকার গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক- নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ এবং আবু বকরকে আটক করে ডিবি। নাহিদ এবং আসিফ সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন এবং বকর তাদের সঙ্গে ছিলেন।

পরের দিন সন্ধ্যায় ডিবি আরও দুই সমন্বয়ক- সারজিস আলম এবং হাসনাত আব্দুল্লাহকে আটক করে। পরে রবিবার ভোরে রাজধানীর মিরপুরে আত্মীয়ের বাসা থেকে আরেক সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুমকে আটক করা হয়।

এরপর থেকে ছয় সমন্বয়ককে নগরীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে রাখা হয়েছে। ডিবি দাবি করেছে, সমন্বয়করা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন বলে তাদেরকে আটক করে নিরাপদ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

নাহিদের মা মমতাজ নাহার বুধবার বলেন, ‘আমি চিন্তিত। আমাদের নিয়ে গিয়ে দেখানো হয়েছে ছেলেমেয়েরা ভালো আছে। এরপর কী হয়েছে, কে জানে! তাই ছেলে মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত উত্তেজনা কমছে না।’

তিনি আরও বলেন, তার ছেলে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন এবং চিকিৎসাধীন ছিলেন। হাসপাতাল থেকে তাকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে, কিন্তু ডিবি হেফাজতে তিনি কোনো চিকিৎসা পাচ্ছেন না। বৃহস্পতিবার আমি ডিবি অফিসে যাব এবং ডাক্তারের দেওয়া ঔষধ কিনে দেব।'

আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদের বাবা মো. বিল্লাল হোসেন বুধবার ডিবি কার্যালয়ে তার ছেলের সঙ্গে দেখা করতে পারেননি।

তিনি বলেন, ‘আমার ছেলেকে যখন ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন সে লুঙ্গি পরিহিত ছিল। আমি তার জন্য একটি টি-শার্ট এবং প্যান্ট নিয়ে ডিবি কার্যালয়ে যাই। কিন্তু আমাকে তার সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। পরে, আমি সেখানে জামাকাপড় রেখে আসি।’

বিল্লাল ডিবি কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চান কখন তার ছেলেকে ছেড়ে দেওয়া হবে। ডিবি কর্মকর্তারা তাকে জানান, আদালতের আদেশ ছাড়া তার ছেলের মুক্তির কোনো সম্ভাবনা নেই।

দুই আইনজীবী, মঞ্জুর আল-মতিন এবং আয়নুনাহার সিদ্দিকা, সোমবার ছয় সমন্বয়কের মুক্তি এবং দেশব্যাপী বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ না করার জন্য আদালতের নির্দেশনা চেয়ে একটি রিট দায়ের করেন।

সোমবার এবং মঙ্গলবার দ্বৈত বেঞ্চে রিটের শুনানি হয় এবং বুধবারের কার্যতালিকায় এটি ছিল ১০ নম্বর অবস্থানে। আদালত সূত্রে জানা গেছে, বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের অসুস্থতার কারণে বুধবার এবং বৃহস্পতিবার দুই দিনের ছুটিতে থাকায় রিটের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়নি।