সেনাপ্রধান: প্রাণহানির আশঙ্কায় কয়েকজন আ. লীগ নেতাকে আশ্রয় দিয়েছি

সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জানিয়েছেন, গত সরকারের কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির জীবন ঝুঁকিতে থাকায় তাদেরকে সেনাবাহিনী আশ্রয় দিয়েছে। তিনি আরও জানান, দলমত, মতাদর্শ ও ধর্ম নির্বিশেষে সকলের প্রতি মানবিক দায়িত্ব থেকেই এই আশ্রয় প্রদান করা হয়েছে।

ওয়াকার-উজ-জামান

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তাদের বিরুদ্ধে যদি কোন অভিযোগ থাকে, মামলা হয়, তাহলে তাদের শাস্তি হবে। কিন্তু আমরা অবশ্যই চাই না কোন আক্রমণ বা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটুক। প্রাণহানির আশঙ্কার কারণেই আমরা তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছি।’

ওয়াকার-উজ-জামান রাজশাহী সেনানিবাসে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে আজ এসব কথা বলেন।

আগস্ট মাসকেন্দ্রিক কোন পাল্টা অভ্যুত্থানের সম্ভাবনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, সেনাপ্রধান বলেন, এ বিষয়ে তার কোনো তথ্য নেই।

পরিস্থিতি নিয়ে বিদেশি রাষ্ট্রের কোন চাপ আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি ‘না’ সূচক জবাব দেন।

তিনি বলেন, ‘এটি একটি ব্যতিক্রমী পরিস্থিতি। সবাই তা বুঝতে পারছেন। সংখ্যালঘু ইস্যুতে কিছু আলোচনা হয়েছে। ২০টি জেলায় মোট ৩০টি সংখ্যালঘু বিরোধী ঘটনা ঘটেছে।’

তিনি আরও বলেন, এ ধরনের ঘটনা কেউ চায় না।

তিনি বলেন, ‘আমরা ঘটনাগুলো তদন্ত করছি। দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।’

রাজশাহী বিভাগের পরিস্থিতি সম্পর্কে ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ‘রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় (সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণের) মতো কিছুই ঘটেনি। এই সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ সবসময় বজায় রাখতে হবে। আমরা সবাই মিলে দেশকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাব।’

সেনাপ্রধান বলেন, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। কিন্তু পুলিশ এখনও ট্রমা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। একবার তা কেটে গেলে, পুলিশ আবার তাদের দায়িত্ব ঠিকমত পালন করতে পারবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ ইতিমধ্যে বিভিন্ন থানায় কাজ শুরু করেছে। আমরা পুলিশকে সুরক্ষা দিচ্ছি। যখন তারা পুরোপুরি কার্যক্রম শুরু করবে, তখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। তারপর আমরা সেনানিবাসে ফিরে যাব।’

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করব। সরকার কিছু সংস্কার চায় এবং একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। এই ক্ষেত্রে আমরা সর্বাত্মক সহায়তা করব।’

সেনাপ্রধান বলেন, পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্রের কিছু ইতিমধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আরও উদ্ধার করা হবে।

গোপালগঞ্জে সেনা সদস্যদের উপর হামলার বিষয়ে সেনাপ্রধান বলেন, এটি ছিল একটি ভুল বোঝাবুঝির ফসল।

তিনি আরও বলেন, ‘ওখানকার পরিস্থিতি শান্ত । আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু তারা যে অপরাধ করেছে তা অবশ্যই তদন্ত করা হবে এবং যারা এতে জড়িত ছিল তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।’