শিগগিরই খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়া হচ্ছে

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে খুব শীঘ্রই উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হতে পারে। শুক্রবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার ৮০তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক দোয়া মাহফিলে এ তথ্য জানান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

খালেদা জিয়া, ফাইল ছবি

তিনি বলেন, ‘ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) জন্মদিন উপলক্ষ্যে আমি আপনাদেরকে সুখবর দিতে চাই, আল্লাহ যদি চান তাহলে খুব শীঘ্রই ম্যাডামকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

এসময় তিনি বিএনপি নেতা-কর্মীদের খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য এবং বিদেশে চিকিৎসা শেষে সুস্থভাবে দেশে ফেরার জন্য দোয়া করার আহ্বান জানান।

খালেদা জিয়ার জন্মদিন বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) হলেও রাজনৈতিক শিষ্টাচার ও সহিষ্ণুতার পরিচয় দিয়ে একদিন পরে তা পালন করা হচ্ছে বলে জানান ফখরুল।

গণতন্ত্রের প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকারের জন্য খালেদা জিয়ার প্রশংসা করে ফখরুল বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের হত্যার পর স্বৈরাচারী শাসক এরশাদ ক্ষমতা দখল করে দলকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করলে একজন গৃহিণী থেকে তিনি রাস্তায় নেমে এসেছিলেন। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে ১৯৯০ সালে স্বৈরাচারী শাসককে উৎখাত করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।’

‘তিনি কেবল তিনবার প্রধানমন্ত্রীই হননি, দেশের সকল সংকটেও জাতিকে নেতৃত্ব দিয়েছেন,’ যোগ করেন ফখরুল।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হৃৎপিণ্ড ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন খালেদা জিয়া। গত ৮ জুলাই, বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে ছয় দিন পর আবারও তাকে এখানে ভর্তি করা হয়। ৪৬ দিন ধরে তিনি এখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘গত দু'দিন ধরে তার অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল। আমরা এখন তাকে বিদেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছি।’

গত বছর ২৬ অক্টোবর, খালেদা জিয়ার পেট ও বুকে পানি জমা এবং লিভারে রক্তক্ষরণ বন্ধ করার জন্য তিনজন মার্কিন বিশেষজ্ঞ ‘ট্রান্সজাগুলার ইন্ট্রাহেপাটিক পোর্টোসিস্টেমিক শান্ট’ (টিআইপিএস) নামে একটি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন।

এর আগে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিশেষ আদালত তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়। এরপর ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর, হাইকোর্ট তার সাজা ১০ বছরে উন্নীত করে। পরবর্তীতে, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।

করোনা মহামারীর মধ্যে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ, সরকার তার সাজা স্থগিত করে ৭৭৬ দিন পর জেল থেকে মুক্তি দেয়। তবে শর্ত ছিল, তাকে গুলশানের বাসায় থাকতে হবে এবং দেশ ত্যাগ করতে পারবেন না।

অবশেষে, গত ৬ আগস্ট, রাষ্ট্রপতির আদেশে খালেদা জিয়া কারামুক্ত হন।