হেলিকপ্টার থেকে গুলি! শেখ হাসিনা ও খায়রুল হকসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় মিরপুরে র‍্যাবের হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালিয়ে ফিরোজ তালুকদার নামে এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীকে হত্যার অভিযোগে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা ও খায়রুল হক

মৃত ফিরোজ তালুকদারের স্ত্রী রেশমা সুলতানা বুধবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেহেদী হাসানের আদালতে এই মামলার আবেদন করেন। বিচারক আবেদনকারীর বক্তব্য শুনে মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অভিযোগটি গ্রহণের নির্দেশ দেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।

মামলার নথিতে অভিযোগ করা হয়, খায়রুল হক প্রধান বিচারপতি থাকাকালীন শেখ হাসিনার নির্দেশে অন্যান্য আইনজ্ঞ এবং অ্যামিকাস কিউরির মতামত উপেক্ষা করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেন।
এই রায় বাংলাদেশে 'অনানুষ্ঠানিক স্বৈরশাসন' প্রতিষ্ঠার পথ তৈরি করে এবং শেখ হাসিনা ও তার 'সহযোগীদের' রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা 'নির্বিচারে' ব্যবহার করার সুযোগ করে দেয়।

অভিযোগে আরও বলা হয়, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে শেখ হাসিনা ও অন্যান্য আসামিরা 'কথিত নির্বাচনের' মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে 'জনগণকে নির্যাতন, তাদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ, অপহরণ এবং গুলি করে হত্যা' করতে থাকে।

সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে যখন ছাত্ররা আন্দোলন শুরু করে, তখন সরকার ‘হত্যা, অপহরণ এবং গ্রেপ্তারের’ মাধ্যমে তাদের ওপর দমন-পীড়ন অব্যাহত রাখে।

অভিযোগে আরও বলা হয়, হাসিনা সরকারের ‘লাভবান’ শীর্ষ কর্মকর্তাদের নির্দেশে এবং অজ্ঞাত আসামিদের ইন্ধনে, পুলিশ, র‍্যাব এবং বিজিবির কিছু 'বিচ্ছিন্ন' সদস্য, আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের কিছু অজ্ঞাত 'গুন্ডা' দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়া আন্দোলন দমন করতে ছাত্র ও সাধারণ জনগণের ওপর গুলি চালায়।

গত ১৯ জুলাই সন্ধ্যা ৬টার দিকে ফিরোজ তালুকদার মিরপুর-১০ নম্বর মোড় পার হওয়ার সময় র‍্যাবের হেলিকপ্টার থেকে গুলিবিদ্ধ হন। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

উল্লেখ্য, গণআন্দোলনের মুখে সরকার পতনের পর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মোট ২৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ মামলাই ঢাকায় দায়ের করা হয়।