কোরআনপ্রেমী বিপ্লবী নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার

প্রয়াত হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার ছিলেন একাধারে একজন বিপ্লবী নেতা, লেখক, অনুবাদক এবং একজন গভীর কোরআনপ্রেমী। সর্বদা কোরআনকে বুকের মধ্যে ধারণ করতেন তিনি। কোরআন তেলাওয়াতকারীদের প্রতি তার ছিল অগাধ শ্রদ্ধা, তিনি তাদেরকে রনাঙ্গনের যোদ্ধাদের সমতুল্য মনে করতেন।

ইয়াহিয়া সিনওয়ার

হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য কামাল আবু আউন জানান, সিনওয়ার নিজেও ছিলেন একজন দক্ষ হাফেজ। তিনি কোরআন তেলাওয়াতকারীদের হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসাম ব্রিগেডের যোদ্ধাদের সঙ্গে তুলনা করতেন।

আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে আবু আউনের বরাত দিয়ে বলা হয়, ‘আমি মাঝেমধ্যেই আবু ইব্রাহিম (ইয়াহিয়া সিনওয়ার) এর সঙ্গে দেখা করতাম। তিনি একজন মহান নেতা হওয়ার আগে ছিলেন একজন সত্যিকারের বিশ্বাসী ব্যক্তি। মসজিদ ও কোরআনের মজলিসে বেড়ে ওঠার কারণে তার মনে কোরআনের প্রতি গভীর ভালোবাসা গড়ে উঠেছিল।’

আবু আউন আরও জানান, সিনওয়ার হামাস সদস্যদের পাশাপাশি অন্যদের মধ্যেও কোরআন হিফজের প্রসারে আগ্রহী ছিলেন। একবার তিনি হামাসের তহবিলে চার লাখ ডলার অনুদান দিয়েছিলেন, যার অর্ধেক ছিল আল-কাসাম ব্রিগেডের জন্য এবং বাকি অর্ধেক একটি কোরআন সেন্টারের জন্য। তার এই উদ্যোগের ফলেই বর্তমানে হামাসের অধিকাংশ যোদ্ধাই হাফেজ।

১৯৬২ সালে গাজা উপত্যকার খান ইউনিসের একটি শরণার্থী শিবিরে জন্মগ্রহণকারী ইয়াহিয়া সিনওয়ার গাজার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি থেকে আরবি ভাষায় স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮২ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে মোট ২২ বছর তিনি ইসরায়েলি কারাগারে কাটিয়েছেন। কারাগারে থাকাকালীন হিব্রু ভাষা শেখেন এবং পরবর্তীতে হিব্রু ও ইংরেজি থেকে আরবি ভাষায় বেশ কয়েকটি বই অনুবাদ করেন। ‘The Thorn and The Carnation’ সহ বেশ কিছু উপন্যাসও রচনা করেছিলেন তিনি। ২০২৪ সালের ১৬ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলি হামলায় তিনি শাহাদাৎ বরণ করেন।