ইসরায়েলি অস্ত্রেই ইসরায়েলে পাল্টা হামলা হিজবুল্লাহর!

গত শনিবার (২২ নভেম্বর) লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইসরায়েলি হামলায় ২৯ জন নিহত হওয়ার পর, পরদিনই রবিবার তেল আবিবে পাল্টা রকেট হামলা চালিয়েছে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিছু রকেট ভূপাতিত করতে সক্ষম হলেও, বেশ কয়েকটি রকেট তেল আবিবের বিভিন্ন স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। এতে বেশ কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং আগুন লাগার খবর পাওয়া গেছে।

তেল আবিবে হিজবুল্লাহর হামলা

চাঞ্চল্যকর তথ্য, ইসরায়েলি অস্ত্রেই হামলা: এই হামলায় ব্যবহৃত উন্নত ক্ষেপণাস্ত্রগুলো একসময় ইসরায়েলেরই ছিল বলে দাবি করেছেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা। ২০০৬ সালের লেবানন যুদ্ধে হিজবুল্লাহ ‘স্পাইক অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক’ ক্ষেপণাস্ত্রগুলো করায়ত্ত করে। পরবর্তীতে, ইরানে পাঠিয়ে সেগুলোর নকল তৈরি এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ঘটানো হয়।

দীর্ঘ ১৭ বছর পর, সেই অস্ত্রই নতুন রূপে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। ইসরায়েলের নিজস্ব অস্ত্রই এখন তাদের সামরিক ঘাঁটি, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনীকে আক্রমণ করছে, যা নেতানিয়াহু প্রশাসনকে বেশ চিন্তিত করে তুলেছে।

ইসরায়েলি অস্ত্র বিশেষজ্ঞদের মতে, ইরান নকশা এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নের মাধ্যমে ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকে আরও নিখুঁত এবং কার্যকর করে তুলেছে। ১৬ কিলোমিটার পাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো লক্ষ্যবস্তুকে ট্র্যাক এবং লক করার উন্নত প্রযুক্তি সম্পন্ন। এগুলো এখন এত নির্ভুলভাবে আঘাত হানতে সক্ষম যে, ইসরায়েলের সামরিক ঘাঁটি এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ওপর কার্যকর চাপ সৃষ্টি করছে।

ইরান এবং তার মিত্র বাহিনীর শত্রুপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্রের নকল তৈরি এবং সেগুলোকে আরও কার্যকর করে পাল্টা হামলা চালানোর ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও আমেরিকান ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্রের নকশা নকল করতে দেখা গেছে ইরানকে। পশ্চিম এশিয়ার অস্ত্র বিশেষজ্ঞদের মতে, হিজবুল্লাহর এই ‘রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং’ ইরানের একটি পরিচিত কৌশল।

বিশ্লেষক মুহাম্মদ আল-বাশারের মতে, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে পুরনো অস্ত্রকে উন্নত করা ইরানের বিশেষত্ব, যার মাধ্যমে তারা আঞ্চলিক শক্তির ভারসাম্য বদলে দিচ্ছে।