ইসরায়েলের পরবর্তী লক্ষ্য হতে পারে সিরিয়া!

গত সপ্তাহে লেবাননের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়ে একটি চুক্তি সই করে ইসরায়েল। ফলে দুই দেশের সীমান্তবর্তী এলাকা আপাতত শান্ত রয়েছে। তবে অনেকেই ধারণা করছেন, এখন সিরিয়া হতে যাচ্ছে ইসরায়েলের আঞ্চলিক সামরিক আক্রমণের পরবর্তী লক্ষ্য। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ তার পৃষ্ঠপোষকদের কাছ থেকে সমর্থন হারাতে শুরু করলেই দেশটিতে ইসরায়েলি হামলার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।

সিরিয়ার পতাকা

সিরিয়ানরা অবশ্য ইতোমধ্যেই লেবানন যুদ্ধের কষ্ট অনুভব করতে পারছে। কারণ লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় ৩৯টি শিশু সহ অন্তত ১১১ জন সিরীয় শরণার্থী নিহত হয়েছে। এছাড়া হাজার হাজার শরণার্থী অনিচ্ছায় নিজ দেশ সিরিয়ায় ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছে। অথচ এক সময় যুদ্ধের কবল থেকে বাঁচার জন্যই তারা লেবাননে আশ্রয় নিয়েছিল।   

২৭ নভেম্বর সকাল থেকে লেবানন-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়। এই চুক্তিতে মধ্যস্থতা করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স। এদিকে গোপন একটি সূত্র জানিয়েছে, এই চুক্তিতে রাজি হওয়ার বিনিময়ে সিরিয়ার অভ্যন্তরে হিজবুল্লাহ লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করার জন্য ইসরায়েলকে সবুজ সংকেত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। 

অবশ্য বিগত এক দশকে ইসরায়েল কয়েকশ বার সিরিয়ায় হামলা করেছে। কিন্তু দেশটি প্রকাশ্যে এই হামলার কথা খুব কমই স্বীকার করেছে। তবে  পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সিরিয়ায় সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইসরায়েলি হামলার ঘটনা বেড়ে গেছে।       

লেবাননে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরপরই বাশার আল আসাদকে একটি সরাসরি সতর্কবার্তা দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেছেন, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আগুন নিয়ে খেলছেন। তিনি সিরিয়ার সেনাবাহিনীকে হিজবুল্লাহ-ইরান নেটওয়ার্কে জড়িয়েছেন। এর জন্য বাজিও ধরেছেন। 

এদিকে কার্নেগি মিডল ইস্ট সেন্টারের একজন সিনিয়র ফেলো মোহান্নাদ হাজি আলি, দ্য নিউ আরবকে বলেছেন, নেতানিয়াহুর বিবৃতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাশার বিরোধীদের মধ্যে যারা তুরস্কের মিত্র তারা ইতোমধ্যেই উত্তর সিরিয়ার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। আসাদ এখন দুর্বল অবস্থানে আছেন। উত্তরে তার পশ্চাদপসরণ অবশ্যই ইরান ও হিজবুল্লাহর ওপর যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণকে প্রভাবিত করবে।       

অবশ্য আলেপ্পোতে সিরিয়ার বিদ্রোহীদের নতুন করে আক্রমণ শুরু করায় ইসরায়েলের কোনো হাত নেই। তারা সম্ভবত ইরান নেতৃত্বাধীন আঞ্চলিক জোটের দুর্বলতায় উৎসাহিত হয়েই এই পদক্ষেপ নিচ্ছে।   

এতদিন ধরে ইরানপন্থী হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী সিরিয়ায় বাশার আল আসাদের শক্তি হিসেবে ছিল। কিন্তু এখন হয়তো তাদের জন্যই তিনি বিপদে পড়তে যাচ্ছেন। কারণ লেবাননে হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতির পর এবার ইসরায়েল সিরিয়ার অভ্যন্তরের হিজবুল্লাহকে দমন করতে চাইবে। ফলে সামনের দিনগুলোতে সিরিয়ায় আরও বেশি ইসরায়েলি হামলা হবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।    

সূত্র: দ্য নিউ আরব