১৫ হাজার কোটি টাকার ৫৫০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ

অনৈতিকভাবে বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগে প্রায় ৫৫০ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট (বিএফআইইউ)। জব্দকৃত অ্যাকাউন্টগুলিতে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা রয়েছে। 

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের লোগো

বিএফআইইউ সূত্রে জানা গেছে, ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকেই অর্থপাচার, ঋণ জালিয়াতি এবং সম্পদ আত্মসাৎসহ বিভিন্ন আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে এই অ্যাকাউন্টগুলো জব্দ করা হয়। জব্দকৃত অ্যাকাউন্টধারীদের মধ্যে রয়েছেন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী এবং পূর্বতন সরকারের সঙ্গে জড়িত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা।

তদন্তের আওতায় রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার পরিবারের সদস্য, সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ, শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, শেখ হেলাল উদ্দিন সহ আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।

এছাড়াও আওয়ামী লীগের গবেষণা কেন্দ্র, সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) এবং সিআরআই-ইয়াং বাংলা প্রকল্পের অ্যাকাউন্টও জব্দ করা হয়েছে।

তদন্তের আওতায় থাকা প্রভাবশালীদের মধ্যে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর প্রাক্তন বিদ্যুৎ উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারেক আহমেদ সিদ্দিক, এবং এনটিএমসি'র প্রাক্তন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (বরখাস্ত) জিয়াউল আহসান। প্রাক্তন সংসদ স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং তার পরিবারের আর্থিক লেনদেনও তদন্তাধীন।

পূর্ববর্তী সরকারের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আ হ ম মুস্তফা কামাল, মোহাম্মদ হাসান মাহমুদ, টিপু মুনশি, আসাদুজ্জামান খান কামাল, জুনাইদ আহমেদ পলক এবং সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, সহ তাদের পরিবারের সদস্য এবং সম্পর্কিত কোম্পানিগুলিও তদন্তের আওতায় রয়েছে।

এস আলম, বেক্সিমকো, সামিট, বসুন্ধরা, ওরিয়নসহ বেশ কয়েকটি বৃহৎ ব্যবসায়িক গ্রুপ এই তদন্তের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। এস আলম গ্রুপের সাইফুল আলম মাসুদ এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে সিআইডি এবং দুদকে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বেক্সিমকোর সালমান এফ রহমান, সামিট গ্রুপের মোহাম্মদ আজিজ খান ও মুহাম্মদ ফারুক খান, বসুন্ধরা গ্রুপের আহমেদ আকবর সোবহান, ওরিয়ন গ্রুপের ওবায়দুল করিম, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের দিলীপ কুমার আগারওয়ালা, নাবিল গ্রুপের আমিনুল ইসলাম, নাসা গ্রুপের নজরুল ইসলাম মাজুমদার এবং প্রয়াত জয়নুল হক সিকদারের পরিবারের সদস্যরাও তদন্তের আওতায় আছেন।

ব্যাংকিং ক্ষেত্রের প্রিমিয়ার ব্যাংকের চেয়ারম্যান এইচবিএম ইকবাল, এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমাল এবং এসবিএসি ব্যাংকের প্রাক্তন চেয়ারম্যান আবু জাফর মোহাম্মদ শফি উদ্দিন, ইউনিয়ন ব্যাংকের প্রাক্তন এমডি মোকাম্মেল হক চৌধুরী এবং প্রাক্তন বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম তদন্তের মুখোমুখি।