সময়ের আগেই সব মেয়াদোত্তীর্ণ দেনা শোধ পেট্রোবাংলার

নির্ধারিত সময়ের দুই মাস আগেই নিজেদের সমস্ত মেয়াদোত্তীর্ণ বৈদেশিক দেনা পরিশোধ করে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা)। আগামী ৩০ জুন দেনা পরিশোধের চূড়ান্ত সময়সীমা থাকলেও, পেট্রোবাংলা এপ্রিল মাসেই এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেছে বলে বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

পেট্রোবাংলার লোগো

পেট্রোবাংলার উপ-মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তারিকুল ইসলাম খান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের সময় সংস্থাটির মোট বকেয়া দেনার পরিমাণ ছিল ৭৩৭.৪৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৮,৭০২ কোটি টাকা)। এরপর থেকে বকেয়াসহ মোট ৩,৭৩৯.৯৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৪৫,২৫৩ কোটি টাকা) পরিশোধ করা হয়েছে।

এই পরিশোধিত অর্থের মধ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানি (আইওসি) শেভরন ও তাল্লো, দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় এলএনজি সরবরাহকারী কাতার এনার্জি ও ওকিউটি, স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানির সরবরাহকারী, দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল (এফএসআরইউ) এবং ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ট্রেড ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইটিএফসি) ঋণের সুদসহ সকল পুঞ্জীভূত পাওনা।

পেট্রোবাংলা জানিয়েছে, এই সাফল্য অর্জনের পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ ভূমিকা রেখেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো - গ্যাস বিতরণ ও উৎপাদন কোম্পানির কাছে পাওনা আদায়ে মাসভিত্তিক লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ও তা অর্জন, গ্রাহকদের নিয়মিত গ্যাস বিল পরিশোধ, বিদ্যুৎ ও সার কারখানায় সরবরাহকৃত গ্যাসের বকেয়া বিল আদায়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় জোরদার করা। এছাড়া, এলএনজি আমদানির বিল পরিশোধ ও স্ট্যান্ড বাই লেটার অব ক্রেডিট (এসবিএলসি) ইস্যুর জন্য ব্যাংকের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ এবং অর্থ বিভাগের অনুমোদনে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) কর্তৃক প্রদত্ত ২ হাজার কোটি টাকার ঋণও এই দেনা পরিশোধ প্রক্রিয়াকে সহজতর করেছে।

সংস্থাটি আরও জানায়, শুধুমাত্র মার্চ এবং এপ্রিল মাসেই মোট ১,৪৪৫.৪১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিশোধ করা হয়েছে। এর ফলে, শেভরন, তাল্লো, কাতার এনার্জি, ওকিউটি, স্পট এলএনজি সরবরাহকারী, এফএসআরইউ এবং আইটিএফসি'র কাছে পেট্রোবাংলার কোনো মেয়াদোত্তীর্ণ পাওনা নেই।

পেট্রোবাংলার এই সাফল্য দেশের ক্রেডিট রেটিংয়ের ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে, স্পট মার্কেটে এলএনজি সরবরাহকারীদের আস্থা বৃদ্ধি পাবে, যা ভবিষ্যতে প্রতিযোগিতামূলক দামে এলএনজি আমদানিতে সহায়তা করবে এবং দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির আওতায় এলএনজি সরবরাহ শৃঙ্খলকে আরও ঝুঁকিমুক্ত ও সুরক্ষিত করবে।