ইরান-ইসরায়েল ইস্যু নিয়ে রিয়াদে জিসিসি নেতাদের মুখোমুখি ট্রাম্প!

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি মাসের ১৩ থেকে ১৬ তারিখের মধ্যে সৌদি আরব সফর করবেন এবং রাজধানী রিয়াদে উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ (জিসিসি)-ভুক্ত ছয়টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হবেন। সৌদি সরকারের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রের বরাতে বার্তা সংস্থা এএফপি এই খবর জানিয়েছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প

গণমাধ্যমে পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রটির মতে, এই শীর্ষ বৈঠকের প্রধান লক্ষ্য হবে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বন্ধন আরও শক্তিশালী করা। উল্লেখ্য, জিসিসি হলো সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, কাতার, কুয়েত ও ওমানের একটি আঞ্চলিক জোট।

ট্রাম্পের এই সফরের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে, যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবের কাছে প্রায় ৩.৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এর আগেও তেল-সমৃদ্ধ সৌদি আরবের সঙ্গে বড় ধরনের বাণিজ্যিক চুক্তি সম্পাদনের বিষয়ে তার আগ্রহ ও সাফল্যের কথা উল্লেখ করেছেন। এছাড়া, প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন সম্পর্কিত কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করছে।

এই সফরের সময়টিও ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, জিসিসি অঞ্চলের নিকটতম প্রতিবেশী ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে তেহরানের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনা পুনরায় শুরু করেছে ওয়াশিংটন, যদিও সপ্তাহান্তে অনুষ্ঠিতব্য আলোচনা আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন ইরান বিষয়ে বরাবরই কঠোর অবস্থান নিয়েছে। তিনি তেহরানের ওপর বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রাখার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন এবং বিশ্বব্যাপী দেশগুলোকে ইরানের তেল ও পেট্রোরসায়ন পণ্য বর্জন করার আহ্বান জানিয়েছেন। ২০১৮ সালে ট্রাম্প পূর্ববর্তী পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে একতরফাভাবে প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন এবং নতুন একটি চুক্তির মাধ্যমে উদ্বেগ নিরসন ও এই অঞ্চলে ইসরায়েলের সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপ এড়ানোর আশা প্রকাশ করেছেন।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই সফরের আরেকটি অন্তর্নিহিত লক্ষ্য হতে পারে সৌদি আরব ও ইসরায়েলের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের বহু প্রত্যাশিত একটি চুক্তি সম্পাদন করা। এটি তার প্রথম মেয়াদে সম্পাদিত আব্রাহাম অ্যাকর্ডসের একটি যৌক্তিক ধারাবাহিকতা হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। তবে, সৌদি আরব তার অবস্থানে অনড়। দেশটি জানিয়েছে, গাজায় চলমান যুদ্ধের অবসান না হওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের কোনো ধরনের পদক্ষেপ তারা বিবেচনা করবে না।