দীর্ঘ এক দশক পর ইরানি হজযাত্রীদের জন্য সৌদি ফ্লাইট পুনরায় চালু

দীর্ঘ এক দশক পর ইরানি হজযাত্রীদের জন্য আবারও ফ্লাইট চালু করেছে সৌদি আরবের বেসরকারি বিমান সংস্থা ফ্লাইনাস। সৌদি বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের এক কর্মকর্তা শনিবার (১৭ মে) বার্তা সংস্থা এএফপিকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এই পদক্ষেপকে দুই দেশের মধ্যে ক্রমোন্নতিশীল সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিফলন হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ইরানিরা ১০ বছর পর সৌদি এয়ারলাইন্সে করে হজে যাচ্ছেন

ওই কর্মকর্তা জানান, সৌদি আরবের ফ্লাইনাস শনিবার (১৭ মে) থেকে তেহরানের ইমাম খোমেনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইরানি হজযাত্রীদের জন্য ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করেছে। এছাড়া, দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মাশহাদ শহরের বিমানবন্দর থেকেও একই ধরনের ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।

চলতি বছরের হজ মৌসুম জুনের প্রথম সপ্তাহ থেকে শুরু হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হজযাত্রীরা পবিত্র হজ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে পৌঁছাতে শুরু করেছেন।

সৌদি কর্মকর্তা আরও জানান, ইরানে ১ জুলাই পর্যন্ত প্রায় ২২৫টি বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। এর মাধ্যমে ৩৫ হাজারেরও বেশি ইরানি হজযাত্রীকে সৌদি আরবে পরিবহন করা হবে। তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন যে, এই ফ্লাইটগুলো শুধুমাত্র হজযাত্রীদের জন্য পরিচালিত হচ্ছে, এগুলো কোনো বাণিজ্যিক ফ্লাইট নয়।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের পর এই প্রথম কোনো সৌদি বিমান সংস্থা ইরানি হজযাত্রীদের জন্য ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করল। ২০১৬ সালে সৌদি আরবে শিয়া ধর্মগুরু নিমর আল-নিমরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পর তেহরানে অবস্থিত সৌদি দূতাবাস এবং মাশহাদে তাদের কনস্যুলেটে হামলার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার জের ধরে রিয়াদ তেহরানের সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে।

তবে, দীর্ঘ সাত বছর পর ২০২৩ সালের মার্চ মাসে চীনের কার্যকর মধ্যস্থতায় এক ঐতিহাসিক চুক্তির মাধ্যমে ইরান ও সৌদি আরব দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে সম্মত হয়। এরপর থেকেই দুই দেশের মধ্যে ধীরে ধীরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা পুনরায় শুরু হতে দেখা যায়।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের কূটনৈতিক উত্তেজনার কারণে সে বছর ইরানি নাগরিকরা পবিত্র হজ পালন করতে পারেননি। যদিও পরের বছর থেকে ইরানিরা হজে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেলেও তাদের পক্ষে ওমরা পালন করা সম্ভব হচ্ছিল না। এই নতুন ফ্লাইট চালুর মধ্য দিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক আরও স্বাভাবিক হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।