জাতিসংঘে সৌদি আরব: ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতিই মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির সূচনা করবে

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি কোনো প্রতীকী পদক্ষেপ নয়, বরং এটি মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য একটি কৌশলগত অপরিহার্যতা। শুক্রবার (২৩ মে) নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের এক প্রস্তুতিমূলক বৈঠকে এই জোরালো অবস্থান ব্যক্ত করেছেন সৌদি আরবের প্রতিনিধি মানাল রাদওয়ান। খবর আরব নিউজের।

সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাউন্সিলর মানাল রাদওয়ান

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বের সমাধানে দ্বি-রাষ্ট্র ফর্মুলা বাস্তবায়নে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার লক্ষ্যে সৌদি আরব ও ফ্রান্স যৌথভাবে আগামী ১৭ জুন নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে একটি উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনের আয়োজন করছে। গাজায় ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলায় ব্যাপক প্রাণহানি ও মানবিক সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে এই উদ্যোগকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ব্যাপক সমর্থন দিচ্ছে।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বৈঠকে সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাউন্সিলর মানাল রাদওয়ান বলেন, ‘ফিলিস্তিন ইস্যুর ন্যায়সঙ্গত সমাধান কেবল নৈতিক ও আইনি দাবিই নয়, এটি পারস্পরিক স্বীকৃতি ও সহাবস্থানের ভিত্তিতে একটি নতুন আঞ্চলিক ব্যবস্থার ভিত্তিপ্রস্তর।’

তিনি আরও বলেন, ‘ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া শান্তির পথে প্রথম পদক্ষেপ- এটি একটি কৌশলগত প্রয়োজন। এটি প্রতীকী পদক্ষেপ নয়, বরং রাজনৈতিক দিগন্ত উন্মোচনের মাধ্যমে হতাশা দূর করার উপায়।’

মানাল রাদওয়ান আরও বলেন, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধের আহ্বানের পাশাপাশি আমাদের এখন একটি দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের দিকেও নজর দিতে হবে। প্রায় আট দশক ধরে চলা এই সংঘাতের অবসান হওয়া দরকার এখনই।’

ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ-নোয়েল বারো বলেন, ‘এই সম্মেলনের লক্ষ্য ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়কে একত্র করা।’ গাজায় চলমান যুদ্ধ বন্ধ ও মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে ফ্রান্স, ব্রিটেন ও কানাডা ইসরায়েলকে সাম্প্রতিক হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।

উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে জাতিসংঘের ১৪৭টি সদস্য রাষ্ট্র ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিলেও দেশটি এখনও পূর্ণ সদস্য নয়; তারা সংস্থাটিতে পর্যবেক্ষক রাষ্ট্রের মর্যাদা পেয়েছে। সম্প্রতি আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে ও স্পেন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ জানিয়েছেন, জুনের সম্মেলনে ফ্রান্সও আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে পারে। একইভাবে বিষয়টি বিবেচনা করছে যুক্তরাজ্যও।

২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে হামাসের হামলার পর ইসরায়েলের সামরিক অভিযান শুরু হয়, যার ফলে এ পর্যন্ত ৫৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যুদ্ধের ভয়াবহতা এবং গাজায় চলমান দুর্ভিক্ষ ও মানবিক সংকট আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।