বিস্ফোরক দাবি: অভিজাতদের সুরক্ষায় ২১ ট্রিলিয়ন ডলারের গোপন ‘ডুমসডে’ বাংকার

সাবেক এক মার্কিন সরকারি কর্মকর্তার চাঞ্চল্যকর দাবিতে বিশ্বজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। তার মতে, মার্কিন সরকার গত দুই দশকে গোপনে ২১ ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় করে বিশ্বজুড়ে ১৭০টিরও বেশি ভূগর্ভস্থ ও সমুদ্রতলদেশীয় ‘ডুমসডে’ বাংকার নির্মাণ করেছে। এই বাংকারগুলো বৈশ্বিক বিপর্যয়ের সময় দেশটির অভিজাত শ্রেণির আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

গোপন বাংকার ও ক্যাথরিন অস্টিন ফিটস

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশের প্রশাসনে হাউজিং অ্যান্ড আরবান ডেভেলপমেন্টের (এইচইউডি) সহকারী সেক্রেটারি ক্যাথরিন অস্টিন ফিটস সম্প্রতি টাকার কার্লসনের পডকাস্টে এক সাক্ষাৎকারে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেন।

সাক্ষাৎকারে ফিটস দাবি করেন, এই বিশাল বাংকার নেটওয়ার্ক একটি গোপন ট্রানজিট সিস্টেম দ্বারা সংযুক্ত এবং এগুলো বিশেষ অজানা শক্তি প্রযুক্তি দ্বারা চালিত। তার মতে, পেন্টাগন ও এইচইউডির মতো বিভিন্ন বিভাগের ‘অব্যাখ্যাত ব্যয়’ থেকে এই বিশাল প্রকল্পের অর্থায়ন করা হয়েছে।

অর্থনীতিবিদ মার্ক স্কিডমোরের ২০১৭ সালের একটি রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে ফিটস এই দাবি করেছেন, যেখানে মার্কিন ফেডারেল বাজেটে ট্রিলিয়ন ডলারের ‘অদৃশ্য’ বরাদ্দের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। নিউ ইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদন অনুসারে, ফিটস দুই বছর ধরে বিভিন্ন রেকর্ড বিশ্লেষণ করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। তিনি আরও জানান, শুধু মার্কিন ভূখণ্ড ও উপকূলীয় অঞ্চলেই ১৭০টি বাংকার রয়েছে এবং বিশ্বজুড়ে আরও অনেক গোপন স্থাপনা ছড়িয়ে আছে। এই বাংকারগুলো কেবল আশ্রয়ের জন্যই নয়, বরং ‘গোপন মহাকাশ কর্মসূচি’সহ নানা গোপন অভিযানের কেন্দ্র হিসেবেও ব্যবহৃত হয় বলে তিনি উল্লেখ করেন।

ফিটস আরও দাবি করেন, বাংকারগুলো একটি অত্যাধুনিক গোপন পরিবহন নেটওয়ার্ক দ্বারা সংযুক্ত এবং এক রহস্যময় শক্তি প্রযুক্তি দ্বারা চালিত, যা কেবল সামরিক বাহিনীর কাছেই পরিচিত। তিনি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত এই শক্তি প্রযুক্তির অস্তিত্ব আছে। সম্প্রতি আকাশে উড়ন্ত অজানা বস্তু (ইউএপি) দেখলে বোঝা যায়, সেগুলো প্রচলিত বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে না।’

যদিও চেয়েন মাউন্টেন কমপ্লেক্সের মতো কিছু মার্কিন সামরিক ভূগর্ভস্থ স্থাপনার অস্তিত্ব রয়েছে, ফিটসের দাবি করা বিশাল পরিসরের বাংকার নেটওয়ার্ক, গোপন শক্তি প্রযুক্তি এবং বিশেষভাবে ‘অভিজাতদের’ জন্য ডুমসডে পরিকল্পনার সপক্ষে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রমাণ মেলেনি। বহু বিশ্লেষক ও গবেষক ফিটসের এই দাবিকে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হিসেবেই দেখছেন, কারণ তিনি এর আগেও বিভিন্ন বিতর্কিত মত ও তত্ত্ব প্রকাশ করেছেন। অনেকেই মনে করেন, এত বিশাল অঙ্কের আর্থিক লেনদেন সম্পূর্ণ গোপনে রাখা প্রায় অসম্ভব।

তবে, ফিটসের এই গবেষণা সরকারি অর্থের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রশ্নকে সামনে এনেছে এবং কয়েকটি মহল থেকে এ বিষয়ে তদন্তের দাবিও উঠেছে।