ইরানে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় নাসরুল্লাহর ‘মানবঢাল’ খ্যাত দেহরক্ষী নিহত

লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর নিহত নেতা হাসান নাসরুল্লাহর সাবেক দেহরক্ষী হুসেইন খলিল ইরানে এক ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন। শনিবার ইরাক সীমান্তের কাছে এই হামলার ঘটনা ঘটে বলে তেহরান-সমর্থিত গোষ্ঠীটির এক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন। হুসেইন খলিল ‘আবু আলী’ নামে পরিচিত ছিলেন এবং নাসরুল্লাহর প্রতি তার বিশ্বস্ততার কারণে তাকে ‘মানবঢাল’ হিসেবে গণ্য করা হতো।

হুসেইন খলিল

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হিজবুল্লাহর এক কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থা এএফপিকে জানান, ইরাক সীমান্তের কাছে হুসেইন খলিলকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। ইরাকের একজন সীমান্তরক্ষী কর্মকর্তা এএফপিকে জানিয়েছেন, খলিল এবং ইরাকের একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর এক সদস্য প্রতিবেশী দেশে প্রবেশের পর ‘ইসরায়েলি ড্রোন হামলায়’ নিহত হন।

ইরাকি সশস্ত্র গোষ্ঠী ‘সাইয়্যেদ আল-শুহাদা ব্রিগেডস’ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই ‘জায়নবাদী আক্রমণে’ তাদের নিরাপত্তা ইউনিটের কমান্ডার হায়দার আল-মুসাউয়ি, হুসেইন খলিল এবং তার ছেলে মাহদি নিহত হয়েছেন।

হুসেইন খলিল বছরের পর বছর ধরে নাসরুল্লাহর সবচেয়ে বিশ্বস্ত সহচরদের একজন ছিলেন। নাসরুল্লাহর জনসমক্ষে বিরল উপস্থিতির সময় তাকে সবসময় পাশে দেখা যেত। শুধু তাই নয়, খলিলের এক ছেলের সঙ্গে নাসরুল্লাহর নাতনির বিয়ে হওয়ায় তাদের মধ্যে গভীর পারিবারিক সম্পর্কও ছিল। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত নাসরুল্লাহর জানাজায় তার মরদেহ বহনকারী গাড়ির ওপরেও দাঁড়িয়ে ছিলেন খলিল।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলিতে এক অতর্কিত হামলায় হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যা করে ইসরায়েল, যার ফলে হিজবুল্লাহর শক্তি অনেকাংশে দুর্বল হয়ে পড়ে। গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েল ইরানের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা চালিয়ে আসছে, যা দুই দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক সংঘাতগুলোর মধ্যে অন্যতম।

এদিকে, শনিবার ইরাকের সালাহউদ্দিন প্রদেশের দুজাইল শহরের কাছে একটি ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ পড়ে পাঁচ শিশু আহত হয়েছে বলে নিরাপত্তা ও চিকিৎসা সূত্র জানিয়েছে। আহত শিশুদের আঘাত মাঝারি ও সামান্য বলে জানা গেছে, তবে ক্ষেপণাস্ত্রটির উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনার কারণে ইরাকের আকাশসীমা বর্তমানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।