গাজায় পানি আনতে গিয়ে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৮, অধিকাংশই শিশু

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নুসাইরাত শরণার্থী শিবিরে পানি সংগ্রহ করতে গিয়ে অন্তত আটজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৭ জন। স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, ওই এলাকায় ইসলামিক জিহাদের এক সদস্যকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছিল, তবে টার্গেট ভ্রান্তির কারণে তা ‘লক্ষ্য থেকে কয়েক ডজন মিটার দূরে’ পড়ে।

এক বিবৃতিতে আইডিএফ বলেছে, “নির্দোষ বেসামরিক মানুষের ক্ষতির বিষয়ে আমরা দুঃখিত। ঘটনাটি পর্যালোচনার আওতায় রয়েছে।”

নুসাইরাতে একটি পানি বিতরণ কেন্দ্রে ক্ষেপণাস্ত্রটি আঘাত হানে। এতে ছয় শিশু ঘটনাস্থলেই নিহত হয় এবং আরও ১৭ জন আহত হন বলে জানিয়েছেন আল-আওদা হাসপাতালের জরুরি চিকিৎসক আহমেদ আবু সাইফান।

গাজায় পানির সংকট গত কয়েক সপ্তাহে মারাত্মক রূপ নিয়েছে। জ্বালানি সংকটের কারণে অধিকাংশ পানিশোধন ও পয়ঃনিষ্কাশন কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে হাজার হাজার মানুষ বাধ্য হয়ে পানি সংগ্রহ কেন্দ্রগুলোর ওপর নির্ভর করছে।

কয়েক ঘণ্টা পর গাজা শহরের একটি জনবহুল বাজারে আরেকটি ইসরায়েলি হামলায় ১২ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে একজন ছিলেন খ্যাতিমান চিকিৎসক আহমাদ কন্দিল। তবে এই হামলা নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় ৫৮ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টাতেই প্রাণ হারিয়েছেন ১৩৯ জন। মৃতদের মধ্যে অর্ধের বেশি নারী ও শিশু।

হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির আলোচনা বর্তমানে স্থবির অবস্থায় রয়েছে। দোহায় যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে আলাপ চলছে, তবে দুই পক্ষই একে অপরকে অগ্রগতি আটকে রাখার অভিযোগ করছে।

রবিবার (১৩ জুলাই) ভোরে গাজা শহরের একটি বাসায় ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে, যেখানে একটি পরিবার আগে থেকেই দক্ষিণ গাজার বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে এসেছিল।

বাসাটির ধ্বংসস্তূপের সামনে দাঁড়িয়ে আনাস মাতার বলেন, “আমার খালা, তার স্বামী ও সন্তানরা আর নেই। ভোরবেলার এই ভয়াবহ গণহত্যার দায় কাদের? তারা তো শুধু বাঁচার আশায় এখানে এসেছিল। গাজায় কোনো জায়গাই নিরাপদ নয়।”