নেতানিয়াহু: ‘ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া সন্ত্রাসকে পুরস্কৃত করার শামিল’

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ফরাসি সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। শুক্রবার তিনি এই পদক্ষেপকে ‘সন্ত্রাসকে পুরস্কৃত করার শামিল’ বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং এটিকে ইসরায়েলের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু আরও বলেন, ‘ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলের পাশাপাশি একটি রাষ্ট্র চায় না, বরং তারা ইসরায়েলের পরিবর্তে একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়।’ তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া হলে তা ইরানের একটি নতুন প্রতিনিধিত্বকারী শক্তির উত্থান ঘটাবে, যা ‘ইসরায়েল ধ্বংসের একটি ক্ষেত্র’ হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।

নেতানিয়াহুর এই কড়া প্রতিক্রিয়া ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁর ঘোষণার পরপরই সামনে আসে। মাক্রোঁ জানান, আগামী সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফ্রান্স আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মাক্রোঁ বলেন, ‘আমরা একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনে ভূমিকা রাখব, এর স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করব এবং এটি যেন নিরস্ত্রীকরণের মাধ্যমে ইসরায়েলের নিরাপত্তার নিশ্চয়তাসহ মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখতে পারে, সে লক্ষ্যে কাজ করব।’ তিনি আরও উল্লেখ করেন, গাজায় সংঘাত বন্ধ এবং বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষায় ফ্রান্সের দীর্ঘমেয়াদি শান্তি প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এদিকে, ফ্রান্সের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থার (পিএলও) মহাসচিব হুসেইন আল-শেখ এটিকে ‘আন্তর্জাতিক আইন এবং ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের প্রতি ফ্রান্সের অঙ্গীকারের প্রতিফলন’ বলে মন্তব্য করেছেন।

বিশ্বের অধিকাংশ দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও ফ্রান্সই প্রথম প্রভাবশালী পশ্চিমা শক্তি হিসেবে এই পদক্ষেপ নিলো। কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ফ্রান্সের এই সিদ্ধান্ত স্পেন, আয়ারল্যান্ড এবং নরওয়ের মতো দেশগুলোকে একই পথে হাঁটতে উৎসাহিত করতে পারে, যারা ইতোমধ্যেই ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির মতো পশ্চিমা দেশগুলো এখনও এই ধরনের স্বীকৃতির বিরোধিতা করে আসছে।