ভারতের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের স্বীকৃতি, পাকিস্তানের সেনাপ্রধানসহ শীর্ষ নেতৃত্বকে পদক

ভারতের বিরুদ্ধে ‘হকের লড়াই’ নামক অভিযানে সেবা ও দক্ষতার স্বীকৃতিস্বরূপ পাকিস্তানের সামরিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্বকে বিভিন্ন মর্যাদাপূর্ণ পদকে ভূষিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদে রাষ্ট্রপতি ভবনে আয়োজিত এক জমকালো অনুষ্ঠানে দেশটির প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি এই পদকগুলো তুলে দেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফসহ শীর্ষ সামরিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত ছিলেন।

পাকিস্তানের বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ‘হকের লড়াই’ অভিযানে সাহসিকতা, কৌশলগত নেতৃত্ব ও নির্দেশনার জন্য সেনাবাহিনী প্রধান ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে ‘হিলাল-ই-জুরাত’ পদক দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, যুদ্ধে আকাশসীমা নিয়ন্ত্রণে সাফল্যের জন্য বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল জাহির আহমেদ বাবর সিধু ‘হিলাল-ই-ইমতিয়াজ’ এবং সমুদ্রসীমা রক্ষায় অবদানের জন্য নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল নাভিদ আশরাফ ‘নিশান-ই-ইমতিয়াজ’ পদক লাভ করেন।

অন্যান্যদের মধ্যে গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম মালিককে ‘সিতারা-ই-বাসালাত’ এবং সামরিক অভিযানের মহাপরিচালক (ডিজিএমও) মেজর জেনারেল কাশিফ আবদুল্লাহ, এয়ার ভাইস মার্শাল আওরঙ্গজেব আহমেদ ও রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহজাদ হামিদকে ‘তমঘা-ই-বাসালাত’ পদকে ভূষিত করা হয়।

পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, ‘বুনিয়ান মারসুস’ অভিযান চলাকালে ‘অনন্য সাহস ও সর্বোচ্চ ত্যাগের’ স্বীকৃতিস্বরূপ প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি পাকিস্তান সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর কর্মকর্তা এবং সৈনিকদের জন্য আরও অনেক সামরিক পুরস্কার অনুমোদন করেছেন। এই সম্মাননাগুলোর মধ্যে রয়েছে আটটি ‘সিতারা-ই-জুরাত’, পাঁচটি ‘তমঘা-ই-জুরাত’, ২৪টি ‘সিতারা-ই-বাসালাত’, ৪৫টি ‘তমঘা-ই-বাসালাত’, ১৪৬টি ‘ইমতিয়াজি আসনাদ’, ২৫৯টি সেনাপ্রধানের প্রশংসাপত্র এবং একটি ‘তমঘা-ই-ইমতিয়াজ’ (সামরিক)।

সামরিক নেতৃত্বের পাশাপাশি দেশের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতৃত্বকেও পাকিস্তানের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘নিশান-ই-ইমতিয়াজ’ প্রদান করা হয়েছে। রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে ভারতের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ‘অসামান্য কর্মক্ষমতা ও কৌশলগত দক্ষতার’ স্বীকৃতি হিসেবে তাদের এই সম্মাননা দেওয়া হয়।

কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় অবদানের জন্য উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার, সিমলা চুক্তি ও জলসীমা ইস্যুতে পাকিস্তানের অবস্থান রক্ষায় আইনমন্ত্রী আজম নাজির তারার, ভারতের বিরুদ্ধে দৃঢ় ভূমিকা রাখায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ এবং কৌশলগত যোগাযোগের জন্য তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারারকে ‘নিশান-ই-ইমতিয়াজ’ দেওয়া হয়। এছাড়া জাতীয় ঐক্য সংহতকরণে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি, কৌশলগত পরামর্শ প্রদানে পরিকল্পনামন্ত্রী আহসান ইকবাল এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা রানা সানাউল্লাহ এই সম্মাননা লাভ করেন।

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পাকিস্তানের অবস্থান সুদৃঢ় করার জন্য পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারিকেও ‘নিশান-ই-ইমতিয়াজ’ প্রদান করা হয়। চেয়ারম্যান জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটি জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জাও এই সম্মাননা পেয়েছেন।

এর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ কূটনৈতিক দলের সদস্য হিসেবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুসাদিক মাসুদ মালিক, সাবেক রাষ্ট্রদূত তারিক ফাতেমি, সিনেটর শেরি রেহমান, সিনেটর সৈয়দ ফয়সাল আলী সাবজওয়ারি, সিনেটর বুশরা আনজুম, জাতীয় পরিষদের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান হিনা রব্বানি খার এবং ইঞ্জিনিয়ার খুররম দস্তগীর খানকে ‘হিলাল-ই-ইমতিয়াজ’ পদক দেওয়া হয়েছে।