ইউক্রেনে লড়াইরত উত্তর কোরীয় সেনাদের ‘বীর’ বললেন পুতিন

ইউক্রেনে রাশিয়ার হয়ে লড়াই করা উত্তর কোরীয় সেনাদের ‘বীর’ হিসেবে অভিহিত করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনকে পাঠানো এক চিঠিতে তিনি এই মন্তব্য করেন। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

জাপানের উপনিবেশ থেকে কোরিয়ার মুক্তি দিবস উপলক্ষে কিম জং উনকে লেখা ওই চিঠিতে পুতিন জাপানি দখলদারির অবসানে সোভিয়েত রেড আর্মি ও উত্তর কোরিয়ার যৌথ সংগ্রামের কথা স্মরণ করেন। তিনি লেখেন, ‘দীর্ঘদিন আগের যুদ্ধের সময় গড়ে ওঠা সামরিক বন্ধুত্ব, সৌহার্দ্য ও পারস্পরিক সহযোগিতার বন্ধন আজও অটুট রয়েছে এবং একইসঙ্গে এটি নির্ভরযোগ্যও।’

পুতিন আরও বলেন, ‘ইউক্রেনীয় দখলদারদের কাছ থেকে কুরস্ক অঞ্চল মুক্ত করতে উত্তর কোরীয় সৈন্যদের বীরত্বপূর্ণ অংশগ্রহণই এর প্রমাণ। রাশিয়ার জনগণ চিরকাল তাদের সাহস ও আত্মত্যাগের কথা স্মরণ রাখবে।’

চিঠিতে রুশ প্রেসিডেন্ট আশা প্রকাশ করেন, ‘রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়া যৌথভাবে কাজ করে তাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে এবং একটি ন্যায়সঙ্গত, বহু মেরুভিত্তিক বিশ্ব প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’

এই চিঠি প্রকাশের সময় রাশিয়ার একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল উত্তর কোরিয়া সফর করছে। দেশটির পার্লামেন্ট স্টেট দুমার স্পিকার ভিয়াচেস্লাভ ভোলোদিন ইউক্রেনে ‘চমৎকার সৈন্য’ পাঠানোর জন্য কিম জং উনকে ধন্যবাদ জানান।

অন্যদিকে, কিম জং উন বলেন, ‘রুশ প্রতিনিধিদলের এই সফর দুই দেশের সম্পর্কে নতুন মাত্রা যোগ করবে।’ তিনি জানান, ‘বুধবার পুতিনের সঙ্গে তার ফোনালাপ হয়েছে, যেখানে তারা দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও বাড়ানো ও ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের বিষয়ে একমত হয়েছেন।’

উল্লেখ্য, গত বছর পুতিনের উত্তর কোরিয়া সফরের সময় রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে একটি পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের এপ্রিল মাসে উত্তর কোরিয়া প্রথমবারের মতো নিশ্চিত করে, তাদের সেনারা ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার পক্ষে লড়াই করছে।

দক্ষিণ কোরিয়া ও পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মতে, ২০২৪ সালে উত্তর কোরিয়া রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে ১০ হাজারের বেশি সেনা মোতায়েন করে। তাদের সঙ্গে আর্টিলারি গোলা, ক্ষেপণাস্ত্র ও দূরপাল্লার রকেট ব্যবস্থাও পাঠানো হয়েছে। সিউলের দাবি, রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করতে গিয়ে এ পর্যন্ত প্রায় ৬০০ উত্তর কোরীয় সৈন্য নিহত এবং কয়েক হাজার আহত হয়েছে।