দারফুরে শরণার্থী শিবিরে আরএসএফের হামলায় নিহত ৩১

সুদানের পশ্চিমাঞ্চল দারফুরে একটি দুর্ভিক্ষকবলিত শরণার্থী শিবিরে ব্যাপক গোলাবর্ষণ করেছে আধাসামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)। শনিবারের (১৬ আগস্ট) এ হামলায় সাত শিশু এবং একজন গর্ভবতী নারীসহ অন্তত ৩১ জন নিহত হয়েছেন। সুদান ডক্টরস নেটওয়ার্কের বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি।

খবরে বলা হয়, শনিবার ভোরে উত্তর দারফুরের প্রাদেশিক রাজধানী আল-ফাশারের বাইরে অবস্থিত আবু শউক শিবিরে এ হামলা চালানো হয়। কয়েক ঘণ্টাব্যাপী গোলাবর্ষণে আরও অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন। গত এক সপ্তাহের মধ্যে এটি শিবিরটির ওপর দ্বিতীয় হামলা। গত সপ্তাহে চালানো প্রথম হামলায় ৪০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়।

আল-ফাশার শহরের স্থানীয় প্রতিরোধ কমিটি জানায়, শনিবার ভোরে আরএসএফ দীর্ঘ সময় ধরে আবু শউক শিবিরে গোলাবর্ষণ করে। এতে ওই শিবিরে থাকা অনেক ব্যক্তিগত সম্পদ এবং অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে যায়। আরএসএফ এখন পর্যন্ত এই হামলার বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, দারফুরে সেনাবাহিনীর শেষ ঘাঁটি আল-ফাশের দখলের চেষ্টা করছে আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফ। এ আল-ফাশারের আশেপাশে অবস্থিত দুটি প্রধান শরণার্থী শিবির হচ্ছে আবু শউক ও জমজম। গত কয়েক মাসে উভয় শিবির বারবার আরএসএফ ও তাদের মিত্র জানজাওয়িদ বাহিনীর হামলার শিকার হয়েছে। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে একটি বড় হামলায় শতাধিক মানুষ নিহত এবং হাজার হাজার মানুষ পালাতে বাধ্য হয়। এ ধরনের হামলার জেরে দুটি শিবিরেই এখন দুর্ভিক্ষ অবস্থা বিরাজ করছে।

২০২৩ সালের এপ্রিলে সুদানের সেনাবাহিনী ও আরএসএফ কমান্ডারদের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এ সংঘাতে উত্তর-পূর্ব আফ্রিকার দেশটির প্রায় এক কোটি ৪০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং দেশটির বিভিন্ন অংশ দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, দারফুরে সংঘটিত সহিংসতা গণহত্যা, ধর্ষণ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে। ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) দারফুর অঞ্চলে সংঘটিত সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত শুরু করেছে।