পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যা: মৃতের সংখ্যা ৬৭০, নিখোঁজ ২০০

পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬৭০ জনে দাঁড়িয়েছে। দেশটির কয়েকটি জেলায় বন্যায় আস্ত গ্রাম, সেতু এবং বিভিন্ন অবকাঠামো ভেসে গেছে। গত চার দিনে সেখানে ৩৫০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার সেনাবাহিনী ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায় উদ্ধারকারীরা ধ্বংসস্তূপের নিচে অনুসন্ধান চালিয়ে যান। শুক্রবার খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে বন্যার নতুন আঘাতে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ে। গত ২৬ জুন দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিতে বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার পর থেকে বন্যা ও বৃষ্টিজনিত কারণে এই বিপুল প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।

সোমবার রাজধানী ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (এনডিএমএ) প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইনাম হায়দার জানান, ২৬ জুন থেকে দেশজুড়ে বৃষ্টি ও বন্যায় প্রায় এক হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। ইনাম আরও জানান, বন্যা কবলিত জেলাগুলোতে সড়ক পরিষ্কার এবং বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরুদ্ধারে কর্তৃপক্ষ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

এদিকে, পেশোয়ার, সোয়াবি ও নওশেরা জেলায় মুষলধারে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। বন্যা-বিধ্বস্ত বুনার, সোয়াত, শাংলা ও মানসেহরা জেলায় বর্ষার নতুন ঢল নামার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সোমবার বেলুচিস্তান প্রদেশের হারনাই জেলায় প্রবল বৃষ্টিতে দুই কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করছে। খাইবার পাখতুনখাওয়া সরকারের মুখপাত্র ফারাজ মুঘল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এখনও অন্তত ২০০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজদের অধিকাংশই সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বুনার জেলার বাসিন্দা, যেখানে শুক্রবার থেকে ২২০ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে।

দেশের অন্যতম বৃহৎ ত্রাণ ও উদ্ধারকারী সংস্থা আল-খিদমত ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা ফজল মাবুদ বুনার জেলা থেকে আনাদোলুকে বলেন, ‘এখানকার পরিস্থিতি ভীতিকর চেয়েও বেশি। বন্যার পানিতে ভেসে আসা ধ্বংসস্তূপ ও বিশাল পাথর ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।’

তিনি জানান, বৃষ্টি ও পাহাড়ি ভূখণ্ড উদ্ধার প্রচেষ্টায় বাধা সৃষ্টি করলেও উদ্ধারকারী ও স্বেচ্ছাসেবকরা ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া নিখোঁজ ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। এনডিএমএ এবং আল-খিদমত ফাউন্ডেশন ছাড়াও বেশ কয়েকটি ত্রাণ সংস্থা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী পাঠিয়েছে।