আশ্রয়প্রার্থী রাখা নিয়ে উত্তপ্ত এসেক্স, হোটেলের ওপর আদালতের নিষেধাজ্ঞা

দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডের এসেক্সে আদালতের এক যুগান্তকারী রায়ের পর ব্রিটেনের বিভিন্ন কাউন্সিল হোটেলগুলোতে আশ্রয়প্রার্থীদের রাখা বন্ধ করতে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। মঙ্গলবার হাইকোর্ট এসেক্সের এপিং ফরেস্ট ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিলের পক্ষে একটি অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এর মাধ্যমে ওই এলাকার ‘দ্য বেল হোটেল’-এ আশ্রয়প্রার্থীদের থাকার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

চলতি বছরের শুরুতে দ্য বেল হোটেলের বাইরে আশ্রয়প্রার্থী-বিরোধী ও সমর্থকদের মধ্যে বিক্ষোভ চরম আকার ধারণ করে। উভয় পক্ষের পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ সময়ে সময়ে সহিংস হয়ে উঠলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। এ ঘটনায় এসেক্স পুলিশ গোলযোগ সৃষ্টির অভিযোগে ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে।

কাউন্সিলের পক্ষ থেকে আদালতে যুক্তি দেওয়া হয়, ওই স্থানে আশ্রয়প্রার্থীদের রাখা জননিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এবং এটি পরিকল্পনা আইনেরও লঙ্ঘন। দ্য বেল হোটেলের একজন আশ্রয়প্রার্থীর বিরুদ্ধে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠার পর স্থানীয় উত্তেজনা আরও তীব্র হয়।

এই রায়ের পর রিফর্ম ইউকে পার্টির নেতা নাইজেল ফারাজ জানিয়েছেন, তার দলের নেতৃত্বাধীন ১০টি স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ‘এপিংয়ের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করতে তাদের ক্ষমতার মধ্যে সবকিছু করবে’। ‘দ্য টেলিগ্রাফ’ পত্রিকায় লেখা এক নিবন্ধে তিনি ‘স্থানীয় হোটেলগুলোতে বসবাসকারী তরুণ নথিবিহীন পুরুষদের দ্বারা সৃষ্ট হুমকি সম্পর্কে উদ্বিগ্নদের’ শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের মাধ্যমে ‘এসেক্সের ওই শহরের উদাহরণ অনুসরণ করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

একই পথে হাঁটার ইঙ্গিত দিয়েছে কনজারভেটিভ পার্টি দ্বারা পরিচালিত হার্টফোর্ডশায়ারের ব্রক্সবোর্ন কাউন্সিলও। তারা চেশান্টের একটি হোটেল নিয়ে জরুরি আইনি পরামর্শ চাইছে বলে নিশ্চিত করেছে।

এ বিষয়ে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ড্যান জার্ভিস বিবিসিকে বলেছেন, সরকার ‘কখনোই মনে করেনি যে হোটেলগুলো আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য উপযুক্ত বাসস্থান’। তিনি জানান, বর্তমানে এপিংয়ে বসবাসরতদের স্থানান্তরিত করার জন্য ‘বিকল্প ব্যবস্থা’ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, কাউন্সিলগুলো আইনি লড়াইয়ে নামবে কি না, সে সিদ্ধান্ত তারা নিতেই পারে। তবে তিনি উল্লেখ করেন যে, এপিংয়ের মামলায় ‘বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট পরিস্থিতি’ জড়িত ছিল।

মামলা চলাকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার আদালতকে এপিং ফরেস্ট ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিলের আবেদনটি খারিজ করে দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু বিচারক স্থানীয় কর্তৃপক্ষের পক্ষেই রায় দেন।

কাউন্সিল নেতা ক্রিস হুইটব্রেড এই নিষেধাজ্ঞাকে ‘দারুণ খবর’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি বাসিন্দাদের বিক্ষোভ প্রদর্শন বা ‘অতিরিক্ত উদযাপন’ না করার জন্য সতর্ক করেছেন। তার আশঙ্কা, এমন উত্তেজনার কারণে ‘অপূরণীয় ক্ষতি’ হতে পারে।