নিষেধাজ্ঞার মুখে ভারতকে তেল সরবরাহে মস্কোর ‘বিশেষ কৌশল’

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শাস্তিমূলক শুল্কের মধ্যেও ভারতকে অপরিশোধিত তেল সরবরাহ অব্যাহত রাখতে রাশিয়ার ‘খুবই বিশেষ ব্যবস্থা’ রয়েছে বলে জানিয়েছেন নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত এক জ্যেষ্ঠ রুশ কূটনীতিক। একইসঙ্গে তিনি আশ্বাস দেন, মার্কিন বাজারে ভারতীয় পণ্য প্রবেশে কোনো বাধার সম্মুখীন হলে রাশিয়ার বাজার ভারতীয় রপ্তানির জন্য সবসময় উন্মুক্ত থাকবে।

বুধবার নয়াদিল্লিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে রুশ দূতাবাসের উপপ্রধান রোমান বাবুশকিন এসব কথা জানান।

ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে রাশিয়া থেকে ভারতের বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল আমদানি ওয়াশিংটনের সঙ্গে নয়াদিল্লির কৌশলগত সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি করেছে। এর মধ্যেই মস্কোর পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব এলো। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এই পদক্ষেপকে ‘অন্যায় ও অবিচারমূলক’ বলে অভিহিত করা হয়েছে।

দূতাবাসের বাণিজ্যবিষয়ক কর্মকর্তা ইয়েভজেনি গ্রিভা বলেন, ‘অপরিশোধিত তেল সরবরাহের একটি বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে... এটি সত্যিই একটি বিশেষ কৌশল।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রুশ কূটনীতিকরা জানান, যেকোনো ধরনের একতরফা পদক্ষেপ সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটায়, মূল্য নির্ধারণ নীতিতে ভারসাম্যহীনতা তৈরি করে এবং বৈশ্বিক বাজারকে অস্থিতিশীল করে তোলে। এ ধরনের পদক্ষেপ উন্নয়নশীল দেশগুলোর জ্বালানি নিরাপত্তাকে বিপন্ন করে বলেও তারা মন্তব্য করেন।

বাবুশকিন বলেন, ‘এই চাপ একেবারেই অযৌক্তিক’।

নয়াদিল্লির সঙ্গে মস্কোর কৌশলগত সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের জন্য এই পরিস্থিতি যে কতটা প্রতিকূল, তা আমরা জানি। আমরা তাদের বিশ্বাস অর্জন করেছি।’

উল্লেখ্য, গত বছর ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য রেকর্ড ৬৮.৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল। একই সময়ে নয়াদিল্লি প্রায় ৮ কোটি ৮০ লক্ষ টন রুশ তেল আমদানি করে।

হোয়াইট হাউসের বাণিজ্য ও উৎপাদন বিষয়ক উপদেষ্টা পিটার নাভারোর দেওয়া তথ্যমতে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ভারতের মোট তেল আমদানিতে রাশিয়ার অংশ মাত্র ১ শতাংশ থেকে বেড়ে ৩০ শতাংশের বেশি হয়েছে।