পাঁচ দশক পর জাম্বিয়ায় দূতাবাস খুলল ইসরায়েল

পাঁচ দশকেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর আফ্রিকার দেশ জাম্বিয়ায় আবারও নিজেদের দূতাবাস চালু করেছে ইসরায়েল। বুধবার (২০ আগস্ট) দেশটির রাজধানী লুসাকায় এই দূতাবাস পুনরায় উদ্বোধন করা হয়।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ইয়েদিওত আহরোনথ-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিয়ন সার এবং জাম্বিয়ার পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতামূলক মন্ত্রী মুলাম্বো হাইম্বে। গিডিয়ন সার বলেন, ‘এটি দুই দেশের মধ্যে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা’।

অনুষ্ঠান চলাকালে দুই দেশের মন্ত্রী দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার করার লক্ষ্যে একটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন। এ বিষয়ে মার্কিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে গিডিয়ন সার লিখেছেন, ‘আমরা দ্বিপাক্ষিক আলোচনা বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছি এবং কৃষি, স্বাস্থ্যসহ আরও অনেক ক্ষেত্রে আমাদের অংশীদারিত্ব বাড়াচ্ছি।’

উল্লেখ্য, ১৯৬০ ও ১৯৭০-এর দশকে জাম্বিয়ায় ইসরায়েলের দূতাবাস চালু ছিল। তবে সেই সময়ে আফ্রিকায় ইসরায়েলি কূটনৈতিক মিশনের সংখ্যা কমিয়ে আনার অংশ হিসেবে এটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আফ্রিকান দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার এবং সম্প্রসারণের একটি বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এই দূতাবাস পুনরায় চালু করা হলো। কূটনৈতিক সফর ও উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে আফ্রিকায় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টার মধ্যেই জাম্বিয়ায় গেলেন সার।

তবে ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইসরায়েলের আচরণ এবং বিশেষ করে গাজায় চলমান গণহত্যামূলক যুদ্ধের কারণে আলজেরিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশগুলোর তীব্র সমালোচনার মুখে রয়েছে তেল আবিব। আফ্রিকান ইউনিয়নের (এইউ) বৈঠকে ইসরায়েলি প্রতিনিধিত্ব নিয়ে উত্তেজনার জেরে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইসরায়েলকে এইউ থেকে বহিষ্কার করা হয় এবং এর পর্যবেক্ষক মর্যাদা কেড়ে নেওয়া হয়।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক নৃশংস হামলা চালিয়ে আসছে, যেখানে অন্তত ৬২,১২২ জন নিহত এবং ১,৫৬,৭০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

গত নভেম্বরে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এছাড়া, গাজায় চালানো যুদ্ধের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) গণহত্যার মামলার মুখোমুখি হয়েছে ইসরায়েল।