গাজার হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলা, সুইজারল্যান্ডের তীব্র নিন্দা

গাজার নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সে সাম্প্রতিক ইসরায়েলি হামলার ‘তীব্র নিন্দা’ জানিয়েছে সুইজারল্যান্ড। সোমবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দেয়।

মার্কিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘সুইজারল্যান্ড খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে, যেখানে বহু বেসামরিক নাগরিক হতাহত হয়েছেন’। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আন্তর্জাতিক মানবিক আইন অনুযায়ী বেসামরিক নাগরিক এবং বেসামরিক অবকাঠামোকে অবশ্যই সর্বদা সুরক্ষা দিতে হবে।

চিকিৎসকদের তথ্যমতে, সোমবার গাজা উপত্যকাজুড়ে নতুন করে ইসরায়েলি হামলায় ছয়জন সাংবাদিকসহ অন্তত ৪৭ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও বহু মানুষ আহত হয়েছেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে অবস্থিত নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সে ইসরায়েলি হামলায় পাঁচজন সাংবাদিক ও একজন অগ্নিনির্বাপক কর্মীসহ ২০ জন নিহত হয়েছেন। মন্ত্রণালয় আরও জানায়, ইসরায়েলি বাহিনী কমপ্লেক্সের একটি ভবনের চতুর্থ তলায় দুটি বিমান হামলা চালায়। দ্বিতীয় হামলাটি এমন সময় চালানো হয়, যখন উদ্ধারকারী দলগুলো আহতদের উদ্ধার এবং নিহতদের মরদেহ পুনরুদ্ধারের জন্য সেখানে পৌঁছেছিল।

সরকারি ফিলিস্তিন টেলিভিশন জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে তাদের ক্যামেরাম্যান হুসাম আল-মাসরি রয়েছেন। কাতারের গণমাধ্যম আল জাজিরাও তাদের চিত্রগ্রাহক মোহাম্মদ সালামার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। একজন চিকিৎসা সূত্র আনাদোলুকে চিত্রসাংবাদিক মারিয়াম আবু দাগ্গার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে। হাসপাতালে চালানো এই বর্বরোচিত হামলায় চিত্রসাংবাদিক মোয়াজ আবু তাহাও নিহত হন। চিকিৎসা সূত্র আনাদোলুকে আরও জানায়, তিউনিসিয়া ও মরক্কোর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের জন্য কাজ করা স্বাধীন সাংবাদিক আহমেদ আবু আজিজ এই হামলায় আহত হওয়ার পর মারা যান।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৬২,৭০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এই সামরিক অভিযানে উপত্যকাটি প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং সেখানে দুর্ভিক্ষ দেখা দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

গত নভেম্বরে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এছাড়া, উপত্যকায় চালানো এই অভিযানের জন্য ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গণহত্যার মামলারও মুখোমুখি হয়েছে।