গাজার হাসপাতালে দ্বৈত বিমান হামলায় নিহত ২০, নেতানিয়াহু বললেন ‘দুঃখজনক ভুল’

গাজার নাসের হাসপাতালে ইসরায়েলি বাহিনীর দ্বৈত বিমান হামলায় পাঁচ সাংবাদিকসহ অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অনেকে। আন্তর্জাতিক মহলের তীব্র সমালোচনার মুখে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এ ঘটনাকে ‘একটি দুঃখজনক ভুল’ বলে মন্তব্য করেছেন। বিষয়টি নিয়ে সেনাবাহিনী তদন্ত শুরু করেছে বলেও তিনি জানান।

সোমবার (২৫ আগস্ট) ভোরে গাজার অন্যতম প্রধান এই হাসপাতালে হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীরা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানিয়েছেন, প্রথম হামলার পর সাংবাদিক ও উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছালে দ্বিতীয় হামলাটি চালানো হয়। এতে কমপক্ষে ২০ জন নিহত এবং আরও অনেকে আহত হন।

নিহত পাঁচজন সাংবাদিক রয়টার্স, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস, আল জাজিরা ও মিডল ইস্ট আইয়ের মতো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের হয়ে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এই হামলাকে গত ২২ মাস ধরে চলমান যুদ্ধের অন্যতম ভয়াবহ ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে, যেখানে এর আগেও হাসপাতাল ও সংবাদকর্মীরা ইসরায়েলি হামলার শিকার হয়েছেন।

ঘটনাটি নিয়ে বিশ্বজুড়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হলে নেতানিয়াহু দুঃখ প্রকাশ করে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ইসরায়েল সাংবাদিক, চিকিৎসাকর্মীসহ সব বেসামরিক নাগরিকের কাজের মূল্য দেয়। এ ঘটনায় আমরা গভীরভাবে দুঃখিত। কারণ আমাদের যুদ্ধ হামাস সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে। আমাদের ন্যায্য লক্ষ্য হলো হামাসকে পরাজিত করা এবং আমাদের জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা।’

ইসরায়েলি সামরিক মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফি ডেফ্রিন জানিয়েছেন, তাদের সেনাবাহিনী বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করে না। তিনি বলেন, ‘অপরাধে জড়িত নয় এমন ব্যক্তিদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া আমরা কখনোই চাই না।’ এ হামলার বিষয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। এ সময় তিনি হামাসকে অভিযুক্ত করে বলেন, ‘তারা বেসামরিক নাগরিকদের মধ্যে লুকিয়ে থাকে।’ তবে হাসপাতালে হামলার সময় সেখানে কোনো সশস্ত্র যোদ্ধা ছিল কি না, তা তিনি নিশ্চিত করেননি।

ইসরায়েলি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনী হাসপাতালের ছাদে হামাসের নজরদারি ক্যামেরা সন্দেহে দুটি গোলা নিক্ষেপ করেছিল।

জাতিসংঘের মহাসচিব, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ এ হামলার নিন্দা জানিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমে জানান, তিনি এ হামলার বিষয়ে অবগত ছিলেন না। পরে তিনি বলেন, ‘আমি এতে খুশি নই। আমি এটা দেখতে চাই না।’

এই হামলাটি এমন এক সময়ে ঘটল, যখন ইসরায়েল ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় আক্রমণ বৃদ্ধি এবং নতুন বসতি নির্মাণের পরিকল্পনা করছে। ইসরায়েল এই পদক্ষেপকে ‘কাজ শেষ করা’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।