জাতিসংঘ: বিশ্বে ২০০ কোটির বেশি মানুষ নিরাপদ পানির সংকটে

বিশ্বজুড়ে এখনো ২০০ কোটিরও বেশি মানুষ নিরাপদ পানীয় জলের সুবিধা থেকে বঞ্চিত বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, সর্বজনীন পানি সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্য অর্জনে অগ্রগতি অত্যন্ত ধীর।

জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এবং ইউনিসেফের যৌথ উদ্যোগে সোমবার (২৫ আগস্ট) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। এতে বলা হয়, গত বছর বিশ্বের প্রতি চারজন মানুষের একজন নিরাপদ পানির সুবিধা পায়নি। এ ছাড়া, ১০ কোটিরও বেশি মানুষ এখনো নদী, পুকুর ও খালের মতো প্রাকৃতিক উৎস থেকে সরাসরি পানি পান করতে বাধ্য হচ্ছে।

জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে, পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও পরিচ্ছন্নতা খাতে উন্নয়নের গতি যথেষ্ট দ্রুত না হওয়ায় লাখ লাখ মানুষ নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন।

২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী সবার জন্য পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন সেবা নিশ্চিত করতে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) গ্রহণ করা হয়েছিল। কিন্তু প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এই লক্ষ্য ক্রমেই নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।’

ডব্লিউএইচও-এর পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও স্বাস্থ্যবিষয়ক পরিচালক রুডিগার ক্রেচ বলেন, ‘পানি, পয়ঃনিষ্কাশন এবং পরিচ্ছন্নতা কোনো বিশেষ সুবিধা নয়, এগুলো মৌলিক মানবাধিকার। বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য আমাদের কার্যক্রম আরও দ্রুততর করতে হবে।’

তবে প্রতিবেদনে পয়ঃনিষ্কাশন খাতে অগ্রগতির চিত্রও তুলে ধরা হয়েছে। ২০১৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১২০ কোটি মানুষ নিরাপদ পয়ঃনিষ্কাশন সেবার আওতায় এসেছেন। এর ফলে এই সেবার পরিধি ৪৮ শতাংশ থেকে বেড়ে ৫৮ শতাংশে পৌঁছেছে। নিরাপদ পয়ঃনিষ্কাশন বলতে এমন উন্নত শৌচাগারকে বোঝানো হয়, যা অন্য পরিবারের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে হয় না এবং যেখানে বর্জ্য নিরাপদে নিষ্কাশন বা পরিশোধন করা হয়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, খোলা স্থানে মলত্যাগের হারও উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। ২০১৫ সালে যেখানে ৭৮ কোটি ৩০ লাখ মানুষ খোলা স্থানে মলত্যাগ করত, ২০২৪ সালে তা কমে ৩৫ কোটি ৪০ লাখে দাঁড়িয়েছে, যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় চার শতাংশ। পাশাপাশি, পরিচ্ছন্নতা খাতেও অগ্রগতি হয়েছে। ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১৬০ কোটি মানুষ ঘরে সাবান ও পানিসহ হাত ধোয়ার সুবিধা পেয়েছেন, যার ফলে এই সেবার বৈশ্বিক পরিধি ৬৬ শতাংশ থেকে বেড়ে ৮০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।