গাজায় সাংবাদিক হত্যা ‘জঘন্য ও মর্মান্তিক’: তীব্র নিন্দা ভারত-পাকিস্তানের

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় সাংবাদিক নিহতের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে পাকিস্তান ও ভারত। বুধবার পৃথক বিবৃতিতে দেশ দুটি এই হত্যাকাণ্ডকে ‘জঘন্য’ ও ‘মর্মান্তিক’ বলে অভিহিত করেছে।

দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সে সোমবার ইসরায়েলি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইসলামাবাদ ও নয়াদিল্লি থেকে এই প্রতিক্রিয়া আসে। ওই বর্বরোচিত হামলায় ছয়জন সাংবাদিকসহ অন্তত ৪৭ ফিলিস্তিনি নিহত হন, যা বিশ্বজুড়ে তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এই হামলাকে ‘অকল্পনীয় ও জঘন্য’ বলে বর্ণনা করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বেসামরিক নাগরিক ও সাংবাদিকদের ওপর ক্রমাগত হামলা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও মানবিক আইনের পাশাপাশি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার গুরুতর লঙ্ঘন।’ পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এই ধরনের ঘৃণ্য অপরাধের জন্য ইসরায়েলকে জবাবদিহির আওতায় আনতে এবং দেশটির দায়মুক্তির অবসানে নাক্কার পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছে।

ভারতও গাজায় সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডকে ‘মর্মান্তিক ও অত্যন্ত দুঃখজনক’ বলে উল্লেখ করে এই সংঘাতে বেসামরিক মানুষের প্রাণহানির নিন্দা জানিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক বিবৃতিতে জানান, সাংবাদিক হত্যা মর্মান্তিক ও অত্যন্ত দুঃখজনক। ভারত সবসময় সংঘাতে বেসামরিক প্রাণহানিকে নিন্দা করে আসছে। তিনি আরও জানান, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে একটি তদন্ত শুরু করেছে।

এই নতুন হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনি সাংবাদিকের সংখ্যা ২৪৬ জনে দাঁড়িয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বের যেকোনো সংঘাতের চেয়ে ইসরায়েল সবচেয়ে বেশি সাংবাদিক হত্যা করেছে।

সিরিয়ায় ইসরায়েলি কর্মকাণ্ডেরও নিন্দা পাকিস্তানের

পাকিস্তান সিরিয়ায় ইসরায়েলি সামরিক কর্মকাণ্ডেরও নিন্দা জানিয়েছে। দেশটি ‘আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদ লঙ্ঘন করে সিরীয় আরব প্রজাতন্ত্রে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর অনুপ্রবেশের তীব্র নিন্দা’ জানায়। ইসলামাবাদ সিরিয়ার সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রতি তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে এবং এই অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি থেকে ইসরায়েলকে বিরত রাখতে বৈশ্বিক শক্তিগুলোর প্রতি আহ্বান জানায়।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েল গাজায় প্রায় ৬৩ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে এই উপত্যকাটি প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং সেখানে তীব্র দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে। গত নভেম্বরে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এছাড়া, গাজায় চালানো যুদ্ধের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) গণহত্যার মামলার মুখোমুখি হয়েছে ইসরায়েল।।