দামেস্কে ব্রিটিশ মন্ত্রী, সম্পর্কন্নোয়নের পথে যুক্তরাজ্য-সিরিয়া

যুক্তরাজ্য ও সিরিয়ার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও নিবিড় হওয়ার পথে একটি নতুন ধাপ সূচিত হয়েছে। যুক্তরাজ্যের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক মন্ত্রী হ্যামিশ ফ্যালকনার দামেস্ক সফর করেছেন। বুধবার ব্রিটিশ সরকারের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, এই সফরে নিরাপত্তা ও জবাবদিহির মতো বিষয়গুলো প্রাধান্য পেয়েছে।

গত জুলাই মাসে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামির সফরের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ১৪ বছর পর দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় হ্যামিশ ফ্যালকনার এই সফর করলেন।

দামেস্কে অবস্থানকালে ফ্যালকনার সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল-শাইবানি এবং বিচারমন্ত্রী মাযহার আব্দুল রহমান আল-ওয়াইসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকে সিরিয়ার রাজনৈতিক উত্তরণের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়। বিশেষ করে, সম্প্রতি দক্ষিণ সিরিয়ায় ঘটা সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রেক্ষাপটে নিরাপত্তা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার পরবর্তী পদক্ষেপগুলো আলোচনায় গুরুত্ব পায়।

এই সফরে ফ্যালকনার ‘কমিশন ফর ইন্টারন্যাশনাল জাস্টিস অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিবিলিটি’ (সিআইজেএ)-এর তদন্তকারীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, ‘এই তদন্তকারীরা বহু বছর ধরে প্রমাণ সংগ্রহ করে আসাদের যুদ্ধাপরাধ উন্মোচনে সহায়তা করেছেন।’

ব্রিটিশ মন্ত্রী তার এই সফরকে ‘সিরিয়ার সঙ্গে অংশীদারত্ব গড়ে তোলার এবং দেশটিকে আরও নিরাপদ ও সমৃদ্ধ হিসেবে পুনর্গঠনে যুক্তরাজ্যের চলমান অঙ্গীকারের প্রমাণ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

ফ্যালকনার আরও বলেন, ‘যুক্তরাজ্য সরকারের পরিবর্তনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সিরিয়ার সঙ্গে একটি শক্তিশালী সম্পর্ক আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা করতে এবং অনিয়মিত অভিবাসন প্রতিরোধে সহায়তা করবে। একইসঙ্গে এটি সিরিয়ার স্থিতিশীলতা ও জবাবদিহির পথে উত্তরণেও সমর্থন জোগাবে।’

তিনি যোগ করেন, ‘সিরিয়ার পরিস্থিতি এখনো ভঙ্গুর। আমরা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক উত্তরণ নিশ্চিত করতে সিরীয় সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাব।’

যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও) জানিয়েছে, এই সফর সিরিয়া বিষয়ক যুক্তরাজ্যের কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গিকে আরও শক্তিশালী করেছে। এই কৌশলের আওতায় সুরক্ষিত সীমান্ত, জাতীয় নিরাপত্তা এবং সিরিয়ার রাজনৈতিক উত্তরণকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।

এফসিডিও-এর মতে, সিরিয়ার নতুন সরকারের সঙ্গে আলোচনার মূল লক্ষ্য হলো এমন ফলাফল অর্জন করা, যা সিরিয়ার জনগণ এবং যুক্তরাজ্যের নিরাপত্তা—উভয়ের জন্যই লাভজনক হবে। এর মধ্যে অনিয়মিত অভিবাসন প্রতিরোধ এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো যেন অস্থিতিশীলতার সুযোগ নিতে না পারে, তা নিশ্চিত করাও অন্তর্ভুক্ত।