ইউক্রেনে রুশ হামলায় ট্রাম্প অখুশি, তবে অবাক হননি!

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় শিশুসহ অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার চালানো এই বর্বরোচিত হামলায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘অখুশি’ হলেও ‘অবাক হননি’ বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই খবরে তিনি (ট্রাম্প) খুশি হননি, তবে অবাকও হননি। এই দুটি দেশ দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধে লিপ্ত। রাশিয়া কিয়েভে এই হামলা চালিয়েছে, একইভাবে ইউক্রেনও সম্প্রতি রাশিয়ার তেল শোধনাগারে আঘাত হেনেছে।’ তিনি আরও যোগ করেন, আগস্ট মাসজুড়ে চালানো হামলায় ইউক্রেন রাশিয়ার তেল শোধনাগার ক্ষমতার ২০ শতাংশ ধ্বংস করেছে।

লেভিট জানান, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি বলেন, ‘যতদিন যুদ্ধ চলবে, দুর্ভাগ্যবশত এই হত্যাকাণ্ডও চলতে থাকবে, আর একারণেই প্রেসিডেন্ট চান এই যুদ্ধের অবসান হোক।’

বৃহস্পতিবার ভোরে রাশিয়ার এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কিয়েভের প্রতিটি জেলাতেই ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। হামলায় চার শিশুসহ অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছেন। কিয়েভের মেয়র ভিতালি ক্লিৎশকো শুক্রবার, ২৯ আগস্ট, নিহতদের স্মরণে শহরে শোক দিবস পালনের ঘোষণা দিয়েছেন। টেলিগ্রামে তিনি বলেন, ‘রাজধানীতে শত্রুপক্ষের ব্যাপক হামলার শিকার হওয়া নিহতদের স্মরণে ২৯ আগস্ট কিয়েভে শোক দিবস ঘোষণা করা হয়েছে।’

তিনি আরও জানান, এই দিনটিতে পৌর ও রাষ্ট্রীয় ভবনগুলোতে পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে এবং সব ধরনের বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ থাকবে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই হামলাকে ‘বেসামরিক নাগরিকদের ভয়াবহ ও ইচ্ছাকৃত হত্যাকাণ্ড’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি নিশ্চিত করেন, নিহতদের মধ্যে শিশুও রয়েছে।

জেলেনস্কি বলেন, ‘রাশিয়া যুদ্ধ শেষ করার পথ বেছে নিচ্ছে না, তারা শুধু নতুন নতুন হামলা চালাচ্ছে। রাতভর কিয়েভে কয়েক ডজন ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে আবাসিক বাড়ি, দপ্তর, বেসামরিক প্রতিষ্ঠান এবং ইউক্রেনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দূতাবাসের ভবনও।’

এই হামলার পর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও জেলেনস্কির মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে সংশয় আরও বেড়েছে। ট্রাম্প দুই নেতার সঙ্গে আলাদাভাবে দেখা করার পর এই বৈঠক আয়োজনের কথা ছিল। তবে ক্রেমলিন সেই সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছে।

গত শুক্রবার রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এনবিসি নিউজকে জানান, পুতিন জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করতে প্রস্তুত নন। বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসও এই বৈঠক হওয়ার বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে। মুখপাত্র লেভিট বলেন, ‘হয়তো এই যুদ্ধের কোনো পক্ষই নিজেরা এর সমাপ্তি টানতে প্রস্তুত নয়। প্রেসিডেন্ট (ট্রাম্প) চান এই যুদ্ধ শেষ হোক, কিন্তু এই দুই দেশের নেতাদেরও তা চাইতে হবে।’