ইউক্রেনকে সহায়তায় রুশ সম্পদ ব্যবহারে ক্ষুব্ধ হাঙ্গেরি, ইইউ’র বিরুদ্ধে আইনি লড়াই শুরু

রাশিয়ার হিমায়িত সম্পদ থেকে ইউক্রেনকে কয়েক বিলিয়ন ইউরো সহায়তা প্রদানের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে হাঙ্গেরি। এই পদক্ষেপ ইউক্রেনকে সহায়তার ক্ষেত্রে ইইউর অভ্যন্তরীণ বিভেদের নতুন একটি দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছে ইউরো নিউজ।

রাশিয়া-ঘনিষ্ঠ হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের নেতৃত্বাধীন সরকার চলতি বছরের মে মাসে এই মামলাটি করেছিল। ইউক্রেনকে সহায়তা দেওয়ার জন্য রাশিয়ার হিমায়িত সম্পদের সুদের অর্থ ব্যবহার করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বুদাপেস্ট এই পদক্ষেপ নেয়। ইউরোপীয় শান্তি তহবিলের (ইপিএফ) বিরুদ্ধে করা মামলাটি প্রথমে ইউরোপীয় বিচার আদালতে দাখিল করা হলেও এখন তা সাধারণ আদালতে স্থানান্তর করা হয়েছে।

ইইউ গত বছর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিমায়িত সম্পদ থেকে অর্জিত সুদের ৯৯ দশমিক সাত শতাংশ ইউক্রেনকে দেওয়া হবে। ইপিএফ এমন একটি আর্থিক কর্মসূচি, যা মিত্র দেশগুলোর জন্য সামরিক সহায়তা সহজতর করে। এই তহবিলের মাধ্যমে ইউক্রেন প্রতি বছর তিন থেকে পাঁচ বিলিয়ন ইউরো সহায়তা পাচ্ছে।

হাঙ্গেরি অভিযোগ করেছে, ‘তাদের ভেটো অগ্রাহ্য করার মাধ্যমে ইপিএফ ইইউ আইন লঙ্ঘন করেছে।’ আদালতে দাখিল করা নথিতে বলা হয়েছে, ‘যেহেতু তারা তহবিলে অবদানকারী রাষ্ট্র নয়, তাই তাদের ভেটোর অধিকার মানা হয়নি। এর ফলে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সমতার নীতি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের গণতান্ত্রিক কার্যকারিতার নীতি লঙ্ঘিত হয়েছে, কারণ একটি সদস্য রাষ্ট্রকে অযৌক্তিকভাবে এবং আইনি ভিত্তি ছাড়াই তার ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।’

হাঙ্গেরির গণমাধ্যম জানিয়েছে, এই মামলাটি ভেটো ক্ষমতা রক্ষার জন্য একটি নজির স্থাপন করতে পারে। তবে আদালতের রায় পেতে কয়েক বছর সময় লেগে যেতে পারে।

ইপিএফ ইতোমধ্যে ইউক্রেনকে ১১ বিলিয়ন ইউরোর বেশি সামরিক সহায়তা প্রদান করেছে এবং ভবিষ্যতে এই তহবিল ইউক্রেন ফ্যাসিলিটি প্রোগ্রামের মাধ্যমে চালিয়ে যাওয়া হতে পারে। এই ঘটনার ফলে হাঙ্গেরি ও ইইউর মধ্যে বিদ্যমান টানাপোড়েন আরও বেড়েছে, বিশেষ করে ইউক্রেন ইস্যুতে হাঙ্গেরির বারবার আপত্তির কারণে।