ইইউকে আয়ারল্যান্ড: ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কথার চেয়ে কাজে মনোযোগ দিন

গাজা যুদ্ধ ইস্যুতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শুধু নিন্দা না করে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আইরিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিমন হ্যারিস। শুক্রবার ইইউর প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের আগে তিনি এই মন্তব্য করেন।

সিমন হ্যারিস বলেন, ‘শুধু নিন্দা জানানোর দিন এখন শেষ হওয়া উচিত। নিন্দা জানানো গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু তা একেবারেই যথেষ্ট নয়।’

তিনি আরও জানান, ‘আমরা আয়ারল্যান্ডে দীর্ঘদিন ধরে ইইউ ও ইসরায়েলের মধ্যকার সহযোগীতা চুক্তি পর্যালোচনার কথা বলে আসছি। অবশেষে তা হয়েছে এবং পর্যালোচনায় এটি পরিষ্কারভাবে দেখা গেছে যে ইসরায়েল তার মানবাধিকার বাধ্যবাধকতা পুরোপুরি লঙ্ঘন করছে।’

তিনি জোর দিয়ে বলেন, কয়েকটি সদস্য রাষ্ট্র আরও সময় দিলেও ইসরায়েল পরিস্থিতি শুধরাতে ব্যর্থ হয়েছে।

হ্যারিস বলেন, ‘সারা বিশ্ব এখন ইউরোপের দিকে তাকিয়ে আছে এটা দেখার জন্য যে, বিশ্বাসযোগ্যতার দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা এখন পদক্ষেপ নিতে ইচ্ছুক কি না? এমন ১০টি ক্ষেত্র রয়েছে যেখানে ইউরোপ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বা ব্যবস্থা নিতে পারে।’

তিনি যোগ করেন, ‘যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা, মানবিক সহায়তার সরবরাহ বৃদ্ধি এবং অবশ্যই সব জিম্মিকে মুক্ত করতে হলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইউরোপকে এখন নিন্দা জানানোর পাশাপাশি পদক্ষেপ নিতে হবে।’

হ্যারিস উল্লেখ করেন, ‘ইউরোপকে অবশ্যই তার মূল্যবোধের পক্ষে দাঁড়াতে হবে’ এবং মানবাধিকার বাধ্যবাধকতা মেনে চলতে চাপ দেওয়ার জন্য ইইউ-ইসরায়েল সহযোগীতা চুক্তির বিধানগুলো ব্যবহার করতে হবে।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৬৩ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এই সামরিক অভিযানে পুরো উপত্যকাটি বিধ্বস্ত হয়েছে এবং সেখানে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে।

গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এ ছাড়া, উপত্যকায় চালানো যুদ্ধের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) গণহত্যার মামলার মুখোমুখি হয়েছে ইসরায়েল।

ইউক্রেন ও লেবানন

বৈঠকের আগে হ্যারিস কিয়েভে রাশিয়ার সাম্প্রতিক হামলারও নিন্দা জানিয়েছেন। এর মধ্যে ইইউ দূতাবাসের ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঘটনাও রয়েছে। তিনি মস্কোর এই কর্মকাণ্ডকে ‘ভিয়েনা কনভেনশনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলে অভিহিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘এর কোনো পরিণতি ছাড়া পার পাওয়া যাবে না। ইউরোপীয় ইউনিয়নের আমাদের জন্য এখন আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি বিবেচনা করা অপরিহার্য।’

লেবানন প্রসঙ্গে হ্যারিস জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান এবং লেবাননের সশস্ত্র বাহিনীকে শক্তিশালী করতে ইইউর একটি নতুন প্রশিক্ষণ মিশন চালুর প্রস্তাব দেন।