গাজার সামরিক চৌকিতে হামলা, চার ইসরায়েলি সেনা নিহত

গাজার একটি সামরিক চৌকিতে হামাসের গেরিলা হামলায় চারজন ইসরায়েলি ট্যাংক সেনা নিহত হয়েছেন। সোমবার ভোরের এই ঘটনাটিকে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইসরায়েলি সাঁজোয়া বাহিনীর জন্য অন্যতম মারাত্মক ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই হামলার পর ইসরায়েলি বাহিনী গাজা সিটিতে ব্যাপক বিমান ও গোলাবর্ষণ শুরু করেছে।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) তথ্য অনুযায়ী, সোমবার ভোরে গাজা সিটির উত্তরে জাবালিয়া ও শেখ রাদওয়ান এলাকার মাঝামাঝি একটি সামরিক ফাঁড়িতে চারজন হামাস সদস্য হামলা চালায়। তারা সেখানে থাকা একটি ট্যাংকের ভেতরে বিস্ফোরক নিক্ষেপ করলে ট্যাংকটিতে আগুন ধরে যায় এবং এর ভেতরে থাকা সব সেনা নিহত হন। হামলাকারীরা ট্যাংক কমান্ডারের ওপরও গুলি চালায়, এতে আরেকজন সেনা আহত হয়েছেন। জানা গেছে, হামলার সময় ওই চৌকিতে ৪০১তম ব্রিগেডের ট্যাংক ইউনিট এবং নাহাল ব্রিগেডের ৫০তম ব্যাটালিয়নের পদাতিক সেনারা অবস্থান করছিলেন, যারা কিছুক্ষণ আগেই একটি রাতের অভিযান শেষ করে ফিরেছিলেন।

ইসরায়েলি সেনারা দাবি করছে, তাদের পাল্টা হামলায় হামাসের একজন সদস্য নিহত হয়েছে এবং বাকিরা পালিয়ে গেছে। পলাতকদের খুঁজে বের করতে তল্লাশি অভিযান চালানো হচ্ছে। হামলাকারীরা কোনো সেনাকে অপহরণের চেষ্টা করেনি বলে সেনাবাহিনী জানিয়েছে। তবে তারা কোনো গোপন সুড়ঙ্গপথ ব্যবহার করে ফাঁড়িতে প্রবেশ করেছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আইডিএফ নিহত চার সেনার মধ্যে তিনজনের পরিচয় প্রকাশ করেছে। তারা হলেন স্টাফ সার্জেন্ট উরি লামেদ (২০), সার্জেন্ট গাদি কোটাল (২০) এবং সার্জেন্ট আমিত আরিয়ে রেগেভ (১৯)। তারা সবাই ৪০১তম সাঁজোয়া ব্রিগেডের ৫২তম ব্যাটালিয়নের সদস্য ছিলেন। চতুর্থ সেনার নাম এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

আইডিএফ জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে হামাস এ ধরনের গেরিলা হামলার তৎপরতা বাড়িয়েছে। প্রায় প্রতি সপ্তাহে একবার করে এ ধরনের হামলার চেষ্টা করা হচ্ছে, যার বেশিরভাগই প্রতিহত করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সামনের সারির সৈন্যদের ক্লান্তি ও ঘন ঘন অভিযানের সুযোগ নিতে হামাস এই কৌশল নিয়েছে।

এদিকে, সোমবার দুপুরে গাজা সিটিতে ব্যাপক বিমান ও গোলাবর্ষণ চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। ফিলিস্তিনি গণমাধ্যমের দাবি, শহরের বিভিন্ন এলাকায় একটি ‘আগুনের বেল্ট’ তৈরি করে আক্রমণ চালানো হয়েছে। ইসরায়েলি সেনারা কয়েকটি আবাসিক টাওয়ার থেকে বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে সেখানে হামলা চালায়, যার মধ্যে একটি ভবনে দুইবার হামলা করা হয়।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক বার্তায় লিখেছেন, ‘আজ গাজা সিটির ওপর প্রচণ্ড ঝড় বইবে এবং সন্ত্রাসের টাওয়ারগুলোর ছাদ কেঁপে উঠবে।’ তিনি হামাস নেতাদের সতর্ক করে বলেন, ‘জিম্মিদের মুক্তি দিন এবং আত্মসমর্পণ করুন, নইলে গাজা ধ্বংস হবে এবং আপনারা নির্মূল হবেন।’ তিনি আরও জানান, ইসরায়েলি বাহিনী গাজা শহরের বিরুদ্ধে তাদের অভিযান আরও সম্প্রসারণের প্রস্তুতি নিচ্ছে।