ইসরায়েলি প্রেসিডেন্টকে গ্রেপ্তারের আহ্বান প্রত্যাখ্যান যুক্তরাজ্যের

যুক্তরাজ্য সরকার ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজোগকে তার লন্ডন সফরের সময় গ্রেপ্তারের জন্য করা একাধিক আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে। গাজা উপত্যকায় যুদ্ধাপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে ফিলিস্তিনিপন্থী কয়েকটি সংগঠন তার বিরুদ্ধে একটি ফৌজদারি অভিযোগও দায়ের করেছিল। তবে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ সেই অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে।

গত সপ্তাহে হিন্দ রজব ফাউন্ডেশন, ইউরোপীয় আইনী সহায়তা কেন্দ্র এবং স্টপ দ্য ওয়ার নামের তিনটি সংস্থা জানায়, অবরুদ্ধ এই ছিটমহলে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানে হারজোগের সম্পৃক্ততা রয়েছে। এই যুক্তিতে তারা একটি ফৌজদারি অভিযোগ দায়ের করে। সংস্থাগুলো ইসরায়েলি প্রেসিডেন্টের বিভিন্ন আপত্তিকর মন্তব্য তুলে ধরে, যেখানে হারজোগ বলেছিলেন, গাজায় কোনো নিরীহ বেসামরিক নাগরিক নেই। তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত এই অঞ্চলে দুর্ভিক্ষের কথাও অস্বীকার করেছেন এবং জেনেভা কনভেনশন লঙ্ঘন করে ইসরায়েলি সামরিক ঘাঁটি পরিদর্শন করেছেন। সংস্থাগুলো আরও দাবি করে, হারজোগের এসব মন্তব্য গাজায় বেসামরিক নাগরিক ও স্থাপনার ওপর নির্বিচারে আক্রমণ পরিচালনাকারী ঊর্ধ্বতন ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তারাও পুনরাবৃত্তি করেছেন।

তবে ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিস (সিপিএস) জানিয়েছে, হারজোগের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য যে প্রমাণ দেওয়া হয়েছে, তা ‘পর্যাপ্ত’ নয়। এ কারণে পুলিশ সফররত প্রেসিডেন্টকে গ্রেপ্তারের জন্য কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

সিপিএসের এই সিদ্ধান্তকে ‘আইনি ও নৈতিক ব্যর্থতা’ হিসেবে উল্লেখ করে সংস্থাগুলো বলেছে, এমন পদক্ষেপ দায়মুক্তির সংস্কৃতিকে আরও শক্তিশালী করবে। স্টপ দ্য ওয়ার কোয়ালিশনের আহ্বায়ক লিন্ডসে জার্মান বলেন, ‘এটা বেশ বিস্ময়কর যে ডাউনিং স্ট্রিটে সরকারের সর্বোচ্চ স্তরে হারজোগকে স্বাগত জানানো হয়েছে এবং যুদ্ধাপরাধের জন্য তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।’

এদিকে, ফিলিস্তিনপন্থী গোষ্ঠী ‘ফ্রেন্ডস অব আল আকসা’ (এফওএ)-ও গত সপ্তাহে হারজোগকে গ্রেপ্তারের আবেদন জানিয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেছিল। যুক্তরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল লর্ড রিচার্ড হার্মার এবং পাবলিক প্রসিকিউশনের পরিচালক স্টিফেন পার্কিনসন ইসরায়েলি প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে সেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আবেদনও প্রত্যাখ্যান করেন।

উল্লেখ্য, আইজ্যাক হারজোগ গত ৯ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্য সফরে যান। তিনি ১০ সেপ্টেম্বর দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে দেখা করেন এবং চ্যাথাম হাউস থিঙ্ক ট্যাঙ্কে বক্তৃতা দেন। ১২ সেপ্টেম্বর তিনি সফর শেষ করে ইসরায়েলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।

সূত্র: দ্য নিউ আরব