টেলিগ্রামকে হাতিয়ার বানানোর চেষ্টা? ফরাসি গোয়েন্দাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ

টেলিগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা পাভেল দুরভ ফরাসি গোয়েন্দা সংস্থার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, সংস্থাটি তার আইনি জটিলতাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে পূর্ব ইউরোপে রাজনৈতিক সেন্সরশিপ চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল। রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে তিনি এই বিস্ফোরক মন্তব্য করেন।

দুরভ জানান, গত বছর ফ্রান্সে আটক থাকার সময় গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্টরা একজন মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে। মলদোভার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে নির্দিষ্ট কিছু টেলিগ্রাম চ্যানেল মুছে ফেলার জন্য তাকে চাপ দেওয়া হয়েছিল। এর বিনিময়ে তার চলমান মামলায় সহায়তার আশ্বাসও দেওয়া হয়।

দুরভ এই প্রস্তাবকে ‘একাধিক দিক থেকে অগ্রহণযোগ্য’ বলে উল্লেখ করেছেন। তার মতে, ‘যদি তারা সত্যিই বিচারকের সঙ্গে যোগাযোগ করে থাকে, তবে এটি বিচার ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপের শামিল। আর যদি তা না করে থাকে, তবে এটি আমার আইনি পরিস্থিতিকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের একটি প্রচেষ্টা, যার পুনরাবৃত্তি আমরা রোমানিয়াতেও লক্ষ্য করেছি।’

দুরভ আরও জানান, প্রথম তালিকায় থাকা চ্যানেলগুলো পর্যালোচনা করে টেলিগ্রাম কেবল সেগুলোই সরিয়েছিল, যা প্ল্যাটফর্মের নীতিমালা লঙ্ঘন করে। কিন্তু পরবর্তীতে দেওয়া দ্বিতীয় তালিকায় এমন সব চ্যানেলের নাম ছিল, যেগুলো বিরোধী দলের মতামত প্রচার করলেও কোনো নীতিমালা ভঙ্গ করেনি। একারণে টেলিগ্রাম সেই তালিকা প্রত্যাখ্যান করে।

এই ঘটনা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী দেশগুলোতে, বিশেষ করে মলদোভা ও রোমানিয়ার মতো ভঙ্গুর গণতন্ত্রে, রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের ক্রমবর্ধমান উদ্বেগকেই সামনে নিয়ে এসেছে। বর্তমানে মলদোভা রাশিয়া ও পশ্চিমা দেশগুলোর চাপের মধ্যে রয়েছে এবং রোমানিয়াও বিভ্রান্তিকর তথ্যের মধ্য দিয়ে একটি নির্বাচনী লড়াইয়ের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে।

দুরভ তার পোস্টে লেখেন, ‘টেলিগ্রাম মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে এবং রাজনৈতিক কারণে কোনো বিষয়বস্তু অপসারণ করবে না। আমাদের প্ল্যাটফর্মে চাপ প্রয়োগের সব প্রচেষ্টা আমি জনসমক্ষে তুলে ধরতে থাকব।’ তবে এই অভিযোগের বিষয়ে ফ্রান্সের সরকারি কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।