ইইউর নতুন আইনে ঝুঁকিতে পড়তে পারে ইসরায়েল

ইউরোপীয় পার্লামেন্ট এমন একটি নতুন আইন অনুমোদন করেছে, যার ফলে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী বা আন্তর্জাতিক আদালতের রায় অমান্যকারী দেশগুলোর জন্য ভিসা-মুক্ত ভ্রমণ সুবিধা স্থগিত করা সহজ হবে। মঙ্গলবার ব্রাসেলসে এই আইনটি পাস হয়, যা ইইউর ভিসা স্থগিতকরণ ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে।

বর্তমানে ৬১টি দেশের নাগরিকরা শেনজেনভুক্ত অঞ্চলে কোনো ভিসা ছাড়াই ১৮০ দিনের মধ্যে ৯০ দিন পর্যন্ত ভ্রমণের সুযোগ পান। সংশোধিত নিয়ম অনুযায়ী, নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করা বা গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘনকারী দেশগুলোর ওপর পুনরায় ভিসা চালুর ক্ষেত্রে ইউরোপীয় কমিশনের ক্ষমতা বাড়বে।

এই প্রথমবার জাতিসংঘের সনদ, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বা মানবিক আইন লঙ্ঘন এবং আন্তর্জাতিক আদালতের সিদ্ধান্ত মেনে না চলাকে ভিসা বাতিলের কারণ হিসেবে যুক্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে, অভিবাসীদের ব্যবহার করে সংকর হুমকি (হাইব্রিড থ্রেট) তৈরি এবং নিরাপত্তা উদ্বেগ বাড়াতে পারে এমন ‘গোল্ডেন পাসপোর্ট’ প্রকল্পও ভিসা বাতিলের নতুন কারণ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি অবস্থান, আশ্রয়ের আবেদন কম মঞ্জুর হওয়া বা অভিবাসী প্রত্যাবাসনে সহযোগিতার অভাবের মতো পুরোনো কারণগুলোও বহাল থাকবে। ভিসা-মুক্ত ভ্রমণের সুবিধার অপব্যবহার রোধে এই আইন গুরুতর লঙ্ঘনের জন্য দায়ী নির্দিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রেও ভিসা অব্যাহতি স্থগিত করার ক্ষমতা দেবে ইইউকে।

এই আইনটি কার্যকর হওয়ার আগে কাউন্সিলের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন প্রয়োজন হবে। ইইউর ভিসা প্রবিধানের দ্বিতীয় অ্যানেক্স অনুযায়ী, যে দেশগুলোর নাগরিকরা বর্তমানে ভিসা-মুক্ত প্রবেশের সুবিধা ভোগ করেন, সেই তালিকায় ইসরায়েলও রয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে ৬৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। নিরবচ্ছিন্ন বোমাবর্ষণে উপত্যকাটি প্রায় বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে এবং সেখানে ব্যাপক ক্ষুধা ও রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গত নভেম্বরে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল। এছাড়া, গাজায় চালানো যুদ্ধের জন্য ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) গণহত্যার মামলার মুখোমুখি হয়েছে।