এসআইবিএল: একীভূতকরণের আগেই একমাত্র শেয়ারধারী পরিচালকের পদত্যাগ

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের (এসআইবিএল) পরিচালনা পর্ষদ থেকে পদত্যাগ করেছেন ব্যাংকটির একমাত্র শেয়ারধারী পরিচালক ও সাবেক চেয়ারম্যান মো. রেজাউল হক। ‘অকার্যকর পর্ষদ, সিদ্ধান্তহীনতা ও দায়হীনতা’কে পদত্যাগের কারণ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি অভিযোগ করেছেন, বর্তমান পর্ষদ ব্যাংকটিকে পুনরুদ্ধারে কার্যকর কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি।

শরিয়াহভিত্তিক পাঁচ ব্যাংককে একীভূত করার সরকারি সিদ্ধান্তের পরপরই তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন। গত রবিবার (১২ অক্টোবর) ব্যাংকের চেয়ারম্যানের কাছে তিনি তার পদত্যাগপত্র জমা দেন। এর আগে, গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এই একীভূতকরণের প্রস্তাবটি অনুমোদন পায়।

পদত্যাগপত্রে মো. রেজাউল হক লিখেছেন, ব্যাংক কোম্পানি আইনের বিধান লঙ্ঘন করে এমন স্বতন্ত্র পরিচালকদের দিয়ে পর্ষদ গঠন করা হয়েছিল, যাদের ব্যাংকের সঙ্গে কোনো স্বার্থ থাকা উচিত নয়। তার মতে, এই পর্ষদ গত এক বছরেও ব্যাংকের অবস্থার কোনো উন্নতি করতে পারেনি এবং তাদের ভূমিকা কেবল অফিসে উপস্থিত থাকা ও বেতন নেওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক আয়োজিত একীভূতকরণ সংক্রান্ত শুনানিতে স্বতন্ত্র পরিচালকরা তাকে না জানিয়েই অংশ নেন, যা তাদের এখতিয়ারের বাইরে ছিল।

নিজের পদত্যাগপত্রে তিনি ২০১৭ সালের ঘটনাও উল্লেখ করেছেন। তিনি দাবি করেন, ‘২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর তাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে অস্ত্রের মুখে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছিল’। এরপরই ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ চট্টগ্রামভিত্তিক শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের হাতে চলে যায়। তিনি জানান, ২০১৩ সালের জুন থেকে ২০১৭ সালের অক্টোবর পর্যন্ত তিনি চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন এবং তার সময়ে ২০১৬ সালে ব্যাংকটি শেয়ারহোল্ডারদের ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

রেজাউল হকের অভিযোগ, এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর গত সাত বছরে ব্যাংকটিতে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম, আওয়ামী সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকটি প্রকৃত উদ্যোক্তা ও শেয়ারধারীদের হাতে ফিরিয়ে দেবে। কিন্তু তা না করে স্বতন্ত্র পরিচালকদের নিয়ে অকার্যকর পর্ষদ গঠন করা হয়’।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকসহ শরিয়াহভিত্তিক পাঁচটি ব্যাংক একীভূত হয়ে একটি নতুন ব্যাংক হিসেবে কার্যক্রম শুরু করবে। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এসআইবিএলের বর্তমান পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা শিগগিরই বিলুপ্ত হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগেই ব্যাংকটির উদ্যোক্তা পরিচালক হিসেবে পদত্যাগ করলেন মো. রেজাউল হক।