ট্রাম্প: যুদ্ধবিরতিতে গাজায় মানবিক সহায়তার ঢল নেমেছে

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে বন্দি বিনিময়ের পর অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় অতি প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে শুরু করেছে। সোমবার মিশরের শার্ম আল-শেখে বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে এক সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন।

ট্রাম্প বলেন, ‘এখন মানবিক সহায়তা আসছে। এর মধ্যে রয়েছে শত শত ট্রাকভর্তি খাদ্য, চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং অন্যান্য সামগ্রী, যার বেশিরভাগের অর্থায়ন করেছেন এই কক্ষে উপস্থিত মানুষেরা। বেসামরিক নাগরিকরা তাদের বাড়িতে ফিরছেন। জিম্মিরাও প্রিয়জনদের সঙ্গে মিলিত হচ্ছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘একটি নতুন ও সুন্দর দিনের সূচনা হচ্ছে এবং এখন পুনর্গঠন শুরু হবে। পুনর্গঠনই হয়তো সবচেয়ে সহজ অংশ হতে যাচ্ছে। আমি মনে করি, আমরা কঠিনতম অংশগুলো সম্পন্ন করেছি, কারণ বাকিটা সহজেই হয়ে যাবে। আমরা সবাই জানি কীভাবে পুনর্গঠন করতে হয়, এবং আমরা বিশ্বের যেকোনো দেশের চেয়ে ভালোভাবে তা করতে জানি।’

এই সাফল্য সম্ভব করার জন্য আরব ও মুসলিম দেশগুলোর প্রতি ‘অগাধ কৃতজ্ঞতা’ প্রকাশ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

তবে তিনি এও বলেন, গাজার পুনর্গঠনের জন্য এই অঞ্চলকে নিরস্ত্রীকরণ করতে হবে এবং সেখানকার বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটি নতুন ও ‘সৎ’ বেসামরিক পুলিশ বাহিনী প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা এ বিষয়েও একমত হয়েছি যে, গাজার পুনর্গঠনের জন্য অঞ্চলটিকে নিরস্ত্রীকরণ করতে হবে এবং সেখানকার মানুষের জন্য নিরাপদ পরিস্থিতি তৈরি করতে একটি নতুন সৎ বেসামরিক পুলিশ বাহিনী গঠন করা প্রয়োজন।’

সোমবারের শুরুতে হামাস ও ইসরায়েল একটি বন্দি বিনিময় চুক্তি কার্যকর করে। এর আওতায় ইসরায়েলের কুখ্যাত ওফের সামরিক কারাগার এবং নেগেভ মরুভূমির বিভিন্ন কারাগার থেকে শত শত ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়। একই সঙ্গে, জীবিত ২০ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়।

সম্মেলনে পৌঁছানোর পর ট্রাম্প বলেন, বন্দিদশায় মারা যাওয়া জিম্মিদের মরদেহ খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, ‘তারা জানে মরদেহগুলো কোথায় আছে। আমার ধারণা, এখনো পাঁচ বা ছয়জনের মরদেহ পাওয়া বাকি আছে।’ তিনি আরও জানান, ‘ইসরায়েলের সঙ্গে সমন্বয় করে অনুসন্ধান দল কাজ করছে এবং তারা বেশ কয়েকজনের মরদেহ খুঁজে পাবে।’

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাস থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৬৭,৮০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এই হামলার ফলে উপত্যকাটি বসবাসের প্রায় অযোগ্য হয়ে পড়েছে।