ইরান: ট্রাম্পের মন্তব্য ‘ভিত্তিহীন’, ইসরায়েলি অপরাধে যুক্তরাষ্ট্রও জড়িত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্যকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে আখ্যা দিয়ে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইরান। একইসঙ্গে ওয়াশিংটনকে ‘সন্ত্রাসবাদের সবচেয়ে বড় পৃষ্ঠপোষক’ এবং ইসরায়েলি অপরাধের সহযোগী হিসেবে অভিযুক্ত করেছে দেশটি। মঙ্গলবার ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনার এক প্রতিবেদনে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই বিবৃতির কথা জানানো হয়।

এর আগে সোমবার ইসরায়েলের পার্লামেন্ট নেসেটে দেওয়া এক ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন, ইরান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি শান্তি চুক্তি করতে চায়। মিশরের শার্ম আল-শেখে একটি আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলনে যোগদানের আগে তিনি এই মন্তব্য করেন।

ট্রাম্পের এমন বক্তব্যের জবাবে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ‘যুক্তরাষ্ট্র হলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসবাদের উৎস এবং সন্ত্রাসী ও গণহত্যাকারী (ইসরায়েলি) জায়নবাদী শাসকগোষ্ঠীর সমর্থক। তাই অন্যকে অভিযুক্ত করার কোনো নৈতিক অধিকার তাদের নেই।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে বারবার মিথ্যাচার করে ইরানের মাটিতে যুক্তরাষ্ট্র ও জায়নবাদী শাসকগোষ্ঠীর যৌথ অপরাধকে কোনোভাবেই বৈধতা দেওয়া যাবে না।’

উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন ইসরায়েল অতর্কিতে তেহরানে হামলা চালায়। এই হামলায় ইরানের সামরিক, পারমাণবিক ও বেসামরিক স্থাপনার পাশাপাশি জ্যেষ্ঠ সামরিক কমান্ডার এবং পরমাণু বিজ্ঞানীরা লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হন। এর জবাবে তেহরানও পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়। পরে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বোমাবর্ষণ করে। ১২ দিন ধরে চলা এই সংঘাত গত ২৪ জুন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া একটি যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে শেষ হয়।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইসরায়েলকে ‘দায়মুক্তি’ দেওয়ার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার জন্য ওয়াশিংটনকে জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে বাধা দেওয়া এবং ইসরায়েলি অপরাধীদের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার মতো কাজগুলো ওয়াশিংটন করে চলেছে।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৬৭ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। লাগাতার এই হামলায় উপত্যকাটি প্রায় বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। গত শুক্রবার ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপ কার্যকর হয়েছে।