রাশিয়া: বন্দি বিনিময়ে ‘কোনো সমাধান নয়’ ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া শান্তি অসম্ভব

রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের উপপ্রধান দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেছেন, ইসরায়েলি জিম্মি ও ফিলিস্তিনি বন্দিমুক্তি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হলেও, এটি গাজায় দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুযায়ী একটি স্বাধীন ও পূর্ণাঙ্গ ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত এই সংঘাত চলতেই থাকবে।

গত সোমবার নিজের টেলিগ্রাম চ্যানেলে তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলি জিম্মি ও ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি নিঃসন্দেহে ভালো একটি কাজ। কিন্তু এটি কোনো সমাধান নয়। জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুযায়ী যতক্ষণ না একটি পূর্ণাঙ্গ ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে, ততক্ষণ কিছুই বদলাবে না। যুদ্ধ চলতেই থাকবে। সবাই এটা জানে।’

মেদভেদেভের এই মন্তব্য এমন সময়ে এলো, যখন গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের অংশ হিসেবে ইসরায়েলি জিম্মিদের সঙ্গে ফিলিস্তিনি বন্দিদের বিনিময় সম্পন্ন হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, হামাস প্রায় ২০ জন জীবিত ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে, যার বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি। এছাড়া চারজন ইসরায়েলি বন্দির মরদেহও হস্তান্তর করা হয়েছে বলে হামাস জানিয়েছে।

গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন। তিনি জানান, ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ে ইসরায়েল ও হামাস উভয়ই সম্মতি দিয়েছে। এর আওতায় গাজায় যুদ্ধবিরতি, সব ইসরায়েলি বন্দির মুক্তি এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর পর্যায়ক্রমিক প্রত্যাহার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

চুক্তিটির পরবর্তী ধাপে হামাসবিহীন নতুন প্রশাসনিক কাঠামো গঠন, আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন এবং হামাসকে নিরস্ত্রীকরণের মতো বিষয়গুলো রয়েছে। কাতার, মিশর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় চলমান ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৬৭ হাজার ৮০০ ছাড়িয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গাজার অধিকাংশ এলাকা এখন বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে এবং অঞ্চলটিকে পুনরায় বাসযোগ্য করতে প্রায় ৭০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে।