গাজায় ত্রাণবাহী ট্রাকের সংখ্যা যাচাইয়ে ব্যবস্থা চায় জাতিসংঘ

গাজায় প্রবেশ করা ত্রাণবাহী ট্রাকের সংখ্যা যাচাই করার জন্য একটি উপযুক্ত ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটি জানিয়েছে, বর্তমানে তাদের ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে এবং শিগগিরই নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এই সংখ্যা যাচাইয়ের একটি প্রক্রিয়া চালুর আশা করছে তারা।

শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে এবং বিভিন্ন ক্রসিং দিয়ে সাহায্যকারী গাড়িবহর প্রবেশ করছে।

ডুজারিক বলেন, ‘গতকাল (বৃহস্পতিবার) গাজায় আমরা আমাদের অংশীদারদের সঙ্গে কারিম শালম, করিম আবু সালাম এবং কিসুফিম ক্রসিং থেকে চিকিৎসা সামগ্রী, খাদ্য, জ্বালানি এবং অন্যান্য পণ্য সংগ্রহ করেছি।’

ডুজারিক আরও উল্লেখ করেন, গাজায় মানুষের চলাচল পর্যবেক্ষণকারী অংশীদারদের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার ১৭,৬০০ জনেরও বেশি মানুষ দক্ষিণ থেকে উত্তরে এবং ১২,৯০০ জন খান ইউনিসের পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে চলাচল করেছে।

জাতিসংঘের ত্রাণবিষয়ক প্রধান টম ফ্লেচার শুক্রবার সকালে কারিম শালম ক্রসিংয়ের ইসরায়েলি অংশের মধ্য দিয়ে মিশর থেকে গাজায় প্রবেশ করেছেন বলেও জানান ডুজারিক। তিনি বলেন, ফ্লেচার এরপর দেইর আল-বালাহতে যান এবং সেখানে ‘ক্যাসল বেকারি’ পরিদর্শন করেন। এই বেকারিটি বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির সহায়তায় পরিচালিত নয়টি বেকারির মধ্যে একটি। যুদ্ধবিরতির পর ফ্লেচারের এটিই প্রথম গাজা সফর এবং তার প্রবেশের অনুমোদন পেতে সহায়তা করায় যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানান ডুজারিক।

ইসরায়েলের কো-অর্ডিনেটর অব গভর্নমেন্ট অ্যাক্টিভিটিজ ইন দ্য টেরিটরিজ (কোগাট) কর্তৃক সরবরাহকৃত ট্রাক প্রবেশের তথ্য জাতিসংঘ কীভাবে যাচাই করে—এমন প্রশ্নের জবাবে ডুজারিক বলেন, ‘এই সংখ্যাগুলো কোগাট মধ্যস্থতাকারীদের দিয়ে থাকে। যখন কোনো সংখ্যা জাতিসংঘের নিজস্ব নয়, আমি চেষ্টা করি তার উৎস সম্পর্কে যথাসম্ভব সুস্পষ্ট তথ্য দিতে।’

তিনি ব্যাখ্যা করেন, জাতিসংঘ কেবল সেই ট্রাকগুলোর সংখ্যাই যাচাই করতে পারে যেগুলো তারা নিজেরা গ্রহণ করে। বাকিগুলোর ক্ষেত্রে মধ্যস্থতাকারীদের দেওয়া সংখ্যার ওপরই বিশ্বাস করতে হয়। ডুজারিক বলেন, ‘আমি আশা করি, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আমাদের একটি নিজস্ব ব্যবস্থা থাকবে, যার মাধ্যমে আমরা আপনাদের আমাদের নিজস্ব সংখ্যা জানাতে পারব। বড় চ্যালেঞ্জ হলো, ট্রাকগুলো যেখানে প্রবেশ করে, তার প্রতিটি জায়গায় আমাদের জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক নেই।’

কেন সব প্রবেশপথে জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক নেই, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, ‘কারণ আমাদের সব সময় সেখানে থাকার অনুমতি দেওয়া হয় না।’ তিনি যোগ করেন, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষই এই অনুমতি দেয় না। তবে তিনি উল্লেখ করেন, জাতিসংঘ ‘একটি নতুন পরিবেশে মানিয়ে চলতে শিখছে’ এবং ‘ইসরায়েলি পক্ষের কাছ থেকে আমরা আগের চেয়ে ভালো সহযোগিতা পাচ্ছি এবং আশা করি এটি সেদিকেই এগোবে।’