গাজায় নতুন করে হামলায় দুই ফিলিস্তিনি নিহত

ইসরায়েলি সেনারা গাজায় নতুন করে হামলা চালিয়েছে বলে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে জানা গেছে। এ ঘটনার ফলে মার্কিন মধ্যস্থতায় হওয়া শান্তিচুক্তি ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে এবং ইসরায়েল ও হামাস একে অপরকে দোষারোপ করছে।

রবিবার (১৯ অক্টোবর) স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাহে বিস্ফোরণ ও গুলি চলার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া খান ইউনিসের আশপাশের আবাসান শহরে ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক থেকে ভারী গুলি বর্ষণের খবর পাওয়া গেছে।

গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উত্তরের জাবালিয়ার পূর্বাঞ্চলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় দুই ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ইসরায়েলি সেনা দাবি করেছে, হামাস গাজার ভিতরে ইসরায়েলি সেনাদের লক্ষ্য করে রকেট-প্ররিপল্ড গ্রেনেড এবং স্নাইপার হামলা চালিয়েছে।

ইসরায়েলি কর্মকর্তার মতে, উভয় ঘটনা ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় ঘটেছে। এটি শান্তিচুক্তির সাহসী লঙ্ঘন।

অন্যদিকে, হামাসের শীর্ষ কর্মকর্তা ইজ্জাত আল-রিশেক বলেছে, তারা শান্তিচুক্তি পালন করছে এবং ইসরায়েল বারবার চুক্তি লঙ্ঘন করছে। তবে আজকের হামলার বিষয়ে কোন পক্ষই সরাসরি মন্তব্য করেনি।

গাজার সরকারিভাবে বলা হয়েছে, চুক্তি অনুযায়ী ইসরায়েল এখন পর্যন্ত ৪৭ বার চুক্তি লঙ্ঘন করেছে, যার ফলে ৩৮ জন নিহত এবং ১৪৩ জন আহত হয়েছে। লঙ্ঘনের মধ্যে রয়েছে বেসামরিকদের ওপর সরাসরি গুলি চালানো, উদ্দেশ্যমূলক গোলাবর্ষণ ও অপারেশন, এবং কয়েকজন বেসামরিককে গ্রেপ্তার করা।

ইসরায়েল এবং হামাস একে অপরকে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ করছে। ইসরায়েল ঘোষণা করেছে, গাজা ও মিশরের মধ্যে রাফাহ সীমান্ত ক্রসিং পরবর্তী ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। রাফাহ ক্রসিং মে ২০২৪ থেকে মূলত বন্ধ রয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী গাজায় সাহায্য পৌঁছে দেওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে, যেখানে আগস্টে শত শত হাজার মানুষ খাদ্য সংকটে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে মৃত বন্দিদের দেহ ফেরতের বিষয়েও বিরোধ চলমান। হামাস ইতিমধ্যেই ২০ জন জীবিত বন্দি এবং ১২ জন মৃত বন্দি ফেরত দিয়েছে। বাকিদের দেহ উদ্ধার করতে বিশেষ যন্ত্রপাতি প্রয়োজন, বলেছে হামাস।

গাজায় নতুন সংঘর্ষ এবং শান্তিচুক্তির স্থায়িত্ব নিয়ে উদ্বেগের কারণে তেল আবিবের শেয়ার সূচক প্রায় ২% পতন করেছে। এছাড়া, ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে হামাসকে অস্ত্রবিসর্জন করা, গাজার প্রশাসন, আন্তর্জাতিক ‘স্থিতিশীলকরণ বাহিনী’ এবং প্যালেস্টাইন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এখনো সমাধানযোগ্য নয়।